ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শেষ হচ্ছে পিকেকে-তুরস্কের ৪০ বছরের সংঘাত, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ১ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১৯:৫৮, ১ মার্চ ২০২৫
শেষ হচ্ছে পিকেকে-তুরস্কের ৪০ বছরের সংঘাত, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা

তুরস্কের নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দি গোষ্ঠী পিকেকে (কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি) দেশটির সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। গোষ্ঠীটির কারাবন্দী নেতা আবদুল্লাহ ওচালান অস্ত্র সমর্পণ করে দল বিলুপ্ত করার আহ্বান জানানোর পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে তুরস্ক রাষ্ট্রের সঙ্গে ৪০ বছর ধরে চলা সংঘাতে অবসান ঘটতে চলছে।

শনিবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

শনিবার এক বিবৃতিতে পিকেকে বলেছে, তারা আশা করছে সরকার ওচালানকে মুক্তি দেবে, যাতে তিনি এই অস্ত্র সমর্পণ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিতে পারেন। ওচালান ১৯৯৯ সাল থেকে নির্জন কারাগারে বন্দি আছেন। তবে বন্দি অবস্থাতেও তিনি পিকেকের ওপর ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখেছেন।

বৃহস্পতিবার কারাগার থেকেই ওচালান তার সংগঠনকে অস্ত্র ত্যাগ, দল ভেঙে দেওয়া এবং তুরস্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের লড়াই বন্ধ করার ঐতিহাসিক আহ্বান জানান।

তুরস্কের অতি-জাতীয়তাবাদী এমএইচপি দলের নেতা এবং তুর্কি সরকারের মিত্র ডেভলেট বাহচেলি সংঘাতের অবসান ঘটানোর জন্য একটি উদ্যোগ শুরু করার কয়েক মাস পর এই ঘোষণা আসে।

বৃহস্পতিবার সকালে তুরস্কের কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির এমপিরা ওচালানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে যান। সেখান থেকেই পিকেকে সংগঠনটিকে চিরতরে বিলুপ্ত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা (দলের) সম্মেলন করুন এবং সিদ্ধান্ত নিন। সংগঠনের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। পিকেকেকে অবশ্যই নিজেদের বিলুপ্ত করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “তার আন্দোলন মূলত ‘গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে’ গঠিত হয়েছিল। তবে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান  এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর ইতিবাচক সংকেতের সমর্থনে পিকেকে-র অস্ত্র সমর্পণের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করেছেন।” 

কুর্দি নেতারা এই উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্বে কুর্দি অধ্যুষিত দিয়ারবাকির এবং ভ্যান শহরে হাজার হাজার মানুষ বড় পর্দায় ওচালানের লিখিত চিঠিটি দেখার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। ডিইএম পার্টির এমপি আহমেত তুর্ক এবং পারভিন বুলদান কুর্দি এবং তুর্কি উভয় ভাষায় চিঠিটি পড়ে শোনান।

শনিবার এক বিবৃতিতে পিকেকে-এর নির্বাহী কমিটি বলেছে, “শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য ও আমাদের নেতার আহ্বান বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করার জন্য আমরা আজ থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছি।”

বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি আরো বলেছে, “আক্রমণের শিকার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বাহিনী কোনো সশস্ত্র পদক্ষেপ নেবে না।”

তুরস্কের ৮৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দিদের জন্য একটি স্বদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই গোষ্ঠীটি ১৯৮৪ সাল থেকে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়