নর্থ ক্যারোলিনায় অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযান
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা রাজ্যের শার্লট শহরে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শনিবার একটি বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ (ডিএইচএস) বলেছে, দেশের দক্ষিণে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান আরো বিস্তৃত করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ডিএইচএস মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমেরিকানরা নিরাপদে থাকুক এবং জননিরাপত্তার হুমকি দূর হোক তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা শার্লটে ডিএইচএস আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তদারকি করছি। আমরা অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের কারণে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”
মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষা তত্ত্বাবধানকারী ডিএইচএস অভিযানের বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি। কতজন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা অংশ নিয়েছিলেন বা আটক ব্যক্তিদের সংখ্যাও পরিস্কারভাবে জানানো হয়নি।
তবে সংস্থাটি নর্থ ক্যারোলিনার কর্মকর্তাদের দোষারোপ করে বলেছে যে, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজনদের আটক করতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই শনিবার এই অভিযান চালানো হয়েছে।
এদিকে শার্লটের মেয়র ভি লাইলস এই অভিযান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটিক এই রাজনীতিবিদ শহরের বাসিন্দাদের সহায়তা করার শার্লট ও মেকলেনবার্গ কাউন্টি পুলিশ বিভাগকে অনুরোধ করেছেন। স্থানীয় পুলিশ অভিবাসন বিরোধী ফেডারেল কর্তৃপক্ষের অভিযানে অংশগ্রহণ করেনি।
নগর কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, অভিবাসন বিষয়ে আইনি নির্দেশনা চাওয়া ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে।
তারা বলছেন, এ ধরনের অভিযান শার্লটে ভয় এবং অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে কারণ অন্যান্য শহরে একই ধরনের অভিযানের ফলে অপরাধমূলক রেকর্ড ছাড়াই লোকজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতারা এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, তাদেরকে জানানো হয়েছে যে- শনিবার থেকে একটি ফেডারেল অভিযান শুরু হবে। মার্কিন প্রতিনিধি আলমা অ্যাডামস, যিনি একজন ডেমোক্র্যাট, গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি শার্লটে সীমান্ত টহল এবং আইসিই কর্মীদের আগমন নিয়ে ‘খুবই উদ্বিগ্ন’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি বলেন, “শার্লটের অভিবাসী সম্প্রদায় কুইন সিটির একটি গর্বিত অংশ এবং আমি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের ভয় দেখানো বা হয়রানি করা দেখতে থাকব না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশিত অভিবাসনবিরোধী অভিযানের নেতৃত্বদানকারী মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তা গ্রেগরি বোভিনো অ্যাডামসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “তিনি (অ্যাডামস) ও নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর জোশ স্টেইনকে ‘একজন অবৈধ বিদেশি ও একজন অভিবাসীর মধ্যে পার্থক্য’ শেখা উচিত।”
মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জোড়ালো করেছেন। বিশেষ করে তিনি ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরগুলোতে অভিবাসী গ্রেপ্তার বাড়ানোর ওপর মনোনিবেশ করেছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ওয়াশিংটনে ফেডারেল কর্মীদের অভিযান চালাতে দেখা গেছে।
ঢাকা/ফিরোজ