ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ইউক্রেন ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ২৪ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১২:৪০, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
ইউক্রেন ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য জেনেভায় আলোচনায় ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তবে তিনি বলেন, “এখনও কিছু কাজ বাকি আছে।” আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তির সব দফা চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ইউক্রেনীয় এবং ইউরোপীয় আলোচকদের বৈঠক শেষে রুবিও সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। খবর বিবিসির

আরো পড়ুন:

বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “এমন ইঙ্গিত রয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল আমাদের কথা শুনছে।”

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে গত সপ্তাহে ফাঁস হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৮ দফা পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এই পরিকল্পনায় রাশিয়াকে অনেক সুবিধা দেওয়ায় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল। সেসময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “ইউক্রেনের সামনে একটি বিকল্প রয়েছে-আমাদের মর্যাদা হারানো অথবা একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হারানো।”

রবিবার গভীর রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, জেনেভার আলোচক দলগুলোর একটি ‘খুব ভালো দিন’ কেটেছে।

তিনি জানান, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল- ২৮ দফার মার্কিন শান্তি পরিকল্পনায় যেসব ইস্যু খোলা রয়ে গেছে, সেগুলোতে ফারাক কমানো। আলোচনায় জড়িত দলগুলো এতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ অর্জন করেছে।

তবে তিনি স্পষ্ট করেন, যেকোনো চূড়ান্ত চুক্তি অনুমোদন করতে হবে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের, এরপর তা রাশিয়ার কাছে পাঠানো হবে। এখনও কয়েকটি বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

রবিবার পরে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেনের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই পক্ষ একটি ‘হালনাগাদ ও পরিমার্জিত শান্তি কাঠামো’ নিয়ে একমত হয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে যৌথ প্রস্তাব নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করবে।

ইউরোপের কয়েকটি দেশ- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতৃত্বে- বিকল্প একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করেছে বলে কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে বিবিসি তা দেখেনি এবং রুবিওও এমন কোনো পরিকল্পনার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন।

এর আগে রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-সমাপ্তির প্রচেষ্টার জন্য ‘কোনো কৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছে না’।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইউক্রেনের মিত্র কিছু ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মস্কো তেল ও গ্যাস রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে।

জেনেভায় মার্কিন খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফাঁস হওয়া ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের পূর্ব দোনেৎস্কের কিছু অংশ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই অঞ্চলসহ লুহানস্ক ও ২০১৪ সালে রাশিয়ার সংযুক্ত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে থাকবে।

মার্কিন এই শান্তি পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আকার কমিয়ে ৬ লাখ সদস্যে সীমিত করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৮ লাখ ৮০ হাজার জন।  

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এর বিনিময়ে কিয়েভ ‘নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি’ পাবে, যদিও সেটির বিস্তারিত কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি। এতে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়া তার প্রতিবেশীদের আক্রমণ করবে না এবং ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ হবে।

খসড়া প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর জোট জি৭-এ যোগদানের জন্য মস্কো আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর মাধ্যমে জোটটিকে আবারো জি৮-এ পরিণত করার মাধ্যমে- রাশিয়াকে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনঃএকীভূত’ করা হবে।

ইউক্রেনকে প্রস্তাবগুলোতে একমত হওয়ার জন্য ট্রাম্প আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। তবে ইউক্রেনের যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান ও ইউরোপের মিত্ররা মার্কিন প্রস্তাবগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর, শনিবার ট্রাম্প জানান, এটি কিয়েভের জন্য তার ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ নয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি খুব আশাবাদী যে আমরা খুব শিগগির শান্তিচুক্তির প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে যাচ্ছি, সেটি বৃহস্পতিবার হোক, অন্যান্য দিন হোক বা পরের সপ্তাহের সোমবার হোক।”

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়