ভেনেজুয়েলার ট্যাংকার জব্দের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রেকে রাশিয়ার নিন্দা
ভেনেজুয়েলা উপকূল থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী কর্তৃক তেলবাহী ট্যাংকার জব্দের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া এই নিন্দা জানান। চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন কোস্ট গার্ড দ্বিতীয়বারের মতো এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে নেবেনজিয়া বলেন, “আমরা মার্কিন সামরিক বাহিনী কর্তৃক তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দ এবং ভেনেজুয়েলার ওপর কার্যত নৌ-অবরোধ আরোপের কঠোর নিন্দা জানাই।”
নেবেনজিয়া আরো উল্লেখ করেন, “অবরুদ্ধ দেশটির সাধারণ মানুষের ওপর এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ফলে যে ভয়াবহ পরিণতি নেমে আসবে, তার দায়ভার ওয়াশিংটনকেই নিতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মার্কিন এই পদক্ষেপ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই চলমান হস্তক্ষেপ ভবিষ্যতে ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের একটি ‘মডেল’ বা ব্লুপ্রিন্ট হয়ে উঠতে পারে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে দাবি করেছেন যে, ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সম্পদ ‘চুরি’ করেছে। সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই সম্পদ ফেরত না দিলে কারাকাসকে ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় নৌ-বহরের’ শক্তির মোকাবিলা করতে হবে।
‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক বিশেষ অভিযান পরিচালনাকারী বিমান এবং সৈন্য ও সরঞ্জামবাহী কার্গো বিমান মোতায়েন করেছে।
হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন যে, প্রথম জব্দ করা দুটি তেলবাহী ট্যাংকার কালোবাজারে পরিচালিত হচ্ছিল এবং নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলোকে তেল সরবরাহ করছিল।
গত সেপ্টেম্বর থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী মাদক বহনের অভিযোগে ক্যারিবীয় অঞ্চলে নৌযানে হামলা চালিয়ে আসছে, যা জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা ‘অবৈধ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।
গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে যখন বারবার জানতে চাওয়া হয় যে, ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করা কি না, ট্রাম্প সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে না দিয়ে অস্পষ্ট মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সে (মাদুরো) যা খুশি করতে পারে। সে যদি শক্ত অবস্থান নিতে চায়, তবে এটাই হবে তার শেষবার শক্ত হওয়া।” তিনি আরো মন্তব্য করেন যে, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোটাই হবে ‘বুদ্ধিমানের কাজ’।
ঢাকা/ফিরোজ