গর্ভবতী মায়ের শারীরিক যত্নে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

ছবি: প্রতীকী
গর্ভাবস্থায় মা ভালো থাকলে গর্ভস্থ শিশুটিও ভালো থাকে। এই সময়ে মায়ের কী খাওয়া উচিত, কেমন পোশাক পরা উচিত, কোন টিকা কখন নেওয়া উচিত এই সব বিষয়ে সচেতনতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি।
সহযোগী অধ্যাপক ডা. জয়শ্রী সাহা স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘গর্ভধারণের আগে থেকে সে যে ধরণের খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত ছিল সেটাই সে কন্টিনিউ করবে। কিন্তু খাবারের পরিমাণটা আমরা একটু বাড়িয়ে খেতে বলি। যেমন—
সে হয়তো আগে দুধ খেতো না, বা ফল খেতো না, সেগুলো খাওয়ার ব্যাপারে আমরা ইনকারেজ করি। শাক-সবজি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার একটু বাড়িয়ে খেতে বলি। এই সময় সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কিছু আয়রন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে বলি। তবে আয়রন এবং ক্যালসিয়াম দুটি ট্যবলেট একসঙ্গে খাওয়া যাবে না। কারণ এগুলোর কোনোটিই শরীরের জন্য খুব ভালো প্রভাব তৈরি করতে পারে না।’’
যদি কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকে এবং ব্লিডিং না হয় তাহলে একজন মা গর্ভাবস্থায় তার স্বাভাবিক কাজগুলো চালিয়ে যেতে পারেন। এবং এই সময় হালকা কিছু এক্সারসাইজও সে করতে পারবে। তবে এই সময় লম্বা জার্নি করা, ভারি কোনো কাজ করা যাবে না। গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস এবং শেষ দুই মাস ফিজিক্যাল রিলেশনটা বন্ধ রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন জয়শ্রী সাহা।
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোষ্টকাঠিন্য না হয়। গর্ভাবস্থায় কোষ্টকাঠিন্যটা একেবারে কমন সমস্যা। এই সময় একজন মা যদি বেশি পরিমাণে দুধ, ফল, এবং আঁশজাতীয় খাবার খায় তাহলে এই সমস্যাটা হয় না। তারপরেও যদি হয় আমরা কিছু ‘ল্যাক্সেটিভ’ সাজেস্ট করি। এই সময়টাতে আমরা হাইহিল পরতে নিষেধ করি। যাতে হঠাৎ সে পড়ে না যায়, বা তার চলাফেরায় অসুবিধা না হয়। আবার পোশাকটাও এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে, যাতে সে আরামদায়ক অবস্থায় থাকতে পারে।’’
গর্ভবতী মা কোন টিকা কখন নেবেন, এই বিষয়ে জয়শ্রী সাহার পরামর্শ—
যদি একজন গর্ভবতী মায়ে হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস তিন ডোজ কমপ্লিট করা থাকে, তাহলে খুব ভালো। অনেক মেয়েরা আছে যে একটা দুইটা ডোজ নিয়ে আর কমপ্লিট করতে পারেননি। তাদের কিন্তু গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি-ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে না। টিটেনাসের পাঁচ ডোজ টিকা যদি কমপ্লিট করা না থাকে তাহলে গর্ভাবস্থার পাঁচ মাসের মধ্যে আমরা একটা ভ্যাকসিন দিতে হবে। আর ছয় মাসের সময় আরেকটি ভ্যাকসিন দিতে হবে। কারও যদি পাঁ টি ভ্যাকসিন আগেই নেওয়া থাকে কিন্তু সেটা যদি পাঁচ বছরের বেশি সময় আগে নেওয়া থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় টিটেনাসের একটি টিকা দিতে হবে।
এই সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা খুব জরুরি।
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
প্রস্রাব ভালোভাবে কমপ্লিট করতে হবে। প্রস্রাব ধরে রাখা যাবে না।
উল্লেখ্য, সঠিক নির্দেশনা পেতে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যে পরবর্তী সময়ের করণীয় ঠিক করতে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ঢাকা/লিপি