গুগলের লোগো কেন এতটা কালারফুল?
গোবিন্দ তরফদার || রাইজিংবিডি.কম
গোবিন্দ তরফদার : আপনি কী কখনো চিন্তা করেছেন কেন গুগলের লোগোতে ভিন্ন ভিন্ন রঙের মুর্ছনা থাকে? কেউ কেউ বলেন এর পিছনে বেশ কিছু যৌক্তিক এবং গাণিতিক যুক্তি বিদ্যমান। আবার অন্যরা ভাবেন এটা আসলে তেমন আহামরি কিছুই না, শুধু মনের ইচ্ছামত গুগল তার লোগোর কালার ডিজাইন করে থাকেন।
সেই ১৯৯৯ থেকে ২০১৫ সাল অব্দি গুগল সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের লোগো কিছুটা পরিবর্তন করেছে। আসুন এবার আমরা সম্ভাব্য কিছু কারণ খুঁজে বের করি যে, কেন তারা তাদের লোগোতে দুবার নীল এবং লাল, একবার করে সবুজ ও হলুদ রঙ ব্যবহার করেছে।
১. গুগল আসলে কোনো নিয়ম মেনে তাদের কালার প্যাটার্ন নির্ধারণ করেনি
রুথ কেদারের মতে, ‘লোগোতে রঙের পুনরাবৃত্তি রয়েছে। তারা মৌলিক রঙ ব্যবহার করেছে অনেকাংশে, কিন্তু মজার বিষয় হল, তারা গুগল এর ‘এল’ এ একটা গৌণ রঙ ব্যবহার করেছে যেখানে রঙের পর্যায়ক্রম অনুসারে আরেকটি মৌলিক রঙের অবস্থান হওয়ার কথা ছিল। এতে করে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, গুগল আসলে গতানুগতিক কোনো কালার নিয়ম মেনে তাদের লোগো ডিজাইন করেনি।’
২. গুগল তার লোগোর গুরুত্বপুর্ণ অক্ষরের রঙ একটু ভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করেছে
যদি আমরা শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, গুগল কিন্তু প্রথম তিনটি অক্ষরে মৌলিক রঙের ব্যবহার করেছে। রঙগুলো হল নীল, লাল, হলুদ। পরবর্তী তিনটা অক্ষর লাল, সবুজ এবং নীল রঙ-ই কেন ব্যবহৃত হল, এটা বুঝতে চাইলে আপনাকে আরজিবি কালার স্কেল বুঝতে হবে। কারণ সফটওয়্যার উন্নয়নের ফলে এখন আরজিবি টাকেই প্রধান কালার স্কেল হিসেবে ব্যবহার করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই।
৪. তারা একটু নান্দনিকতাটাকে মাথায় রেখে সাধারণ রঙ ও আলোর মৌলিক রঙকে মিলিয়ে একটু ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছে
যখন আমরা পেইন্টিং এর দিক থেকে চিন্তা করব লাল, হলুদ এবং নীল হল মৌলিক রঙ। আবার যদি আমরা আলোর রঙের কথা বিবেচনা করি তাহলে লাল, সবুজ এবং নীল হল মৌলিক রঙ। আসলে নতুন একটি সুন্দর সৃষ্টির জন্য এই মেলবন্ধনটা অনেকটাই যুক্তিসঙ্গত। G= নীল O= লাল O= হলুদ G= নীল L= সবুজ E= লাল সৌন্দর্যতাকে প্রাধান্য দিয়েই হয়ত লাল রঙকে বাদ দিয়ে সবুজ রঙ দিয়ে আরম্ভ করা হয়েছে গুগলের লোগোটা। ৫. লেগো ব্রিক্স দ্বারা গুগলের প্রথম যে সার্ভার বানানো হয়েছিল, সেই স্মৃতিটাকেই স্মরণ করে গুগল লোগোর রঙগুলো
লেগো ব্রিক্স এর মাধ্যমে গুগল সর্বপ্রথম যে সার্ভার র্যা ক বানিয়েছিল, সেটাকে তারা ১০টি ৪ জিবি হার্ডড্রাইভ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ, সস্তা এবং সহজে বর্ধনশীল একটি ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করতেন। এখানে যে রঙগুলো ব্যবহৃত হয়েছে যেমন লাল, হলুদ, নীল এবং সবুজ, পরবর্তীতে সবগুলোই গুগলের লোগোতে ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক বিশ্লেষক এটাও মনে করেন যে, গুগল আসলে সেসময় লোগোটা বানিয়েছিল মজার ছলে। কারণ তারা তখন এটা ধারণাও করতে পারেনি যে, অদূর ভবিষ্যতে তাদের এই ক্ষুদ্র প্রজেক্টটি এত বড় একটি পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম