ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘মেয়েকে কীভাবে বলবো, তার মা বেঁচে নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ৯ জুলাই ২০২১  
‘মেয়েকে কীভাবে বলবো, তার মা বেঁচে নেই’

স্ত্রী ফিরোজা বেগম এবং একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে সংসার ছিল মো. জাহেদের। স্বামী অসুস্থ থাকায় সংসারের চাকা সচল রাখতে হাল ধরেন ফিরোজা বেগম। মাত্র তিন মাস আগে কাজ নেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড কারখানা। বৃহস্পতিবার রাতে কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মারা গেছেন ফিরোজা। মেয়ে জানে, মা অসুস্থ। বাবা আশ্বাস দিয়েছে মাকে নিয়ে ফিরবেন। কিন্তু মা যে বেঁচে নেই! এখন ফিরে গিয়ে কি বলবেন মেয়েকে?

শুক্রবার (৯ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে স্ত্রীর লাশের অপেক্ষারত জাহেদ একথা বলেন।

জাহেদ জানান,‘আমি গার্মেন্টসে কাজ করতাম। অসুস্থ থাকায় কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দেই। ৩ মাস আগে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড কারখানায় কাজ পায় ফিরোজা। বেতন ৬ হাজার টাকা। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ডিউটি। ওভারটাইম শেষে ৮টা বেজে যায়। কিন্তু কে জানতে সেই ডিউটিই হবে তার জীবনের শেষ।’

তিনি বলেন,‘ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর একবার তার সাথে কথা হয়। ৫টার সময় আগুন লাগার খবর পাই। এরপর ফোন দেই। রিং হয় কিন্তু কেউ ফোন ধরে না। এখন মোবাইলও বন্ধ হয়ে গেছে।’ 

জাহেদ বলেন,আমাদের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়া। ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। ঘটনার পর থেকে মেয়েকে ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। উঠলেই জিজ্ঞেস করে, মা কই, মা কই? বলেছি, মেডিকেলে আছে। নিয়ে আসবো। মেয়েকে এখন গিয়ে কি সান্ত¦না দিবো। কিভাবে বলবো যে তার মা আর বেঁচে নেই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫২ জন শ্রমিক মারা গেছেন।

ঢাকা/মামুন/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়