জুলাইযোদ্ধা হাদির মৃত্যু: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ক্ষোভের গর্জন
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবাদে জেগে ওঠে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সবার আগে রাস্তায় নেমে আসে। মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগে আসে। এ ছাড়া রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাস ‘আমরা সবাই হাদি হবো’ স্লোগেন উত্তাল হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী স্লোগানে গর্জে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। ক্যাম্পাস থেকে শত শত শিক্ষার্থী এই মিছিলে অংশ নেয়। একই সঙ্গে ছাত্রশিবিরও বড় মিছিল করে। তাদের মুখে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়, ‘তুমি কে আমি, হাদি হাদি’, ‘আমরা সবাই হাদি হব’, ‘নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর’সহ বিভিন্ন স্লোগান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১০টার পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জোহা চত্বরে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে শহরের অভিমুখে রওনা দেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, হাদি হত্যার বিচার চাই’, ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’, ‘দিল্লি যাদের মামা বাড়ি, বাংলা ছাড়ো তাড়াতাড়ি’, ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়ো ভারত ভক্তি’, ‘সুশীলতার দিন শেষ, বিচার চাই বাংলাদেশ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
রাত ১১টায় জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ শুরু করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। পরে সোহরাওয়ার্দী ও আলাওল হল প্রদক্ষীণ করে ২ নম্বর গেট মোড়ে এসে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘ভারতের আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘লাল জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কবো’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে হাদির রেখে যাওয়া কাজ সমাপ্ত করতে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে রফিক-জব্বার হল হয়ে পরিবহন চত্ত্বর হয়ে ছাত্রী হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনার চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জুলাই বিপ্লবের সম্মুখ সারির নেতা ওসমান হাদির হত্যকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
হাদির মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতিবাজার মোড়ে গিয়ে পৌঁছায়।
মিছিলটি তাঁতিবাজার মোড়ে কিছু সময় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। পরে সেখান থেকে আবার মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন রাস্তার বিশ্বজিৎ চত্বরে এসে পৌঁছান। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল শুরু হয়ে মডার্ন মোড়, পরবর্তীতে শাপলা চত্বর ঘুরে প্রধান ফটকে শেষ হয়। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিক্ষোভ করেন কারমাইকেল কলেজ ও অনন্য্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান শোনা যায়।
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা]