ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কর্নেল তাহের দিবস আজ

|| রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০১, ২০ জুলাই ২০১৩   আপডেট: ০৮:৪৫, ১১ আগস্ট ২০২০
কর্নেল তাহের দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২১ জুলাই : আজ ২১ জুলাই। কর্নেল তাহের দিবস। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালে লে. কর্নেল এম এ তাহেরকে এক প্রহসনের বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

দীর্ঘ ৩৪ বছর রাষ্ট্রীয় এ হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার বা বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

৩৪ বছর পর গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কর্নেল তাহেরের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের এবং সামরিক আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আবু ইউসুফ খানের স্ত্রী ফাতেমা ইউসুফ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এর ধারাবাহিকতায় ৩৭ বছর পর চলতি বছরের ২০ মে এ হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ বিচার সম্পন্ন হয়।

ওই বিচারের রায়ে আদালত তাহেরের মৃত্যুদণ্ড `ঠান্ডা মাথার খুন` বলে অভিহিত করতে সরকারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

১৯৮ পৃষ্ঠার রায়ের অভিমতে আদালত বলেন, কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড হত্যাকাণ্ড। কারণ, ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনেক আগেই জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদানে মনস্থির করেন।

কর্নেল আবু তাহেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেই সামরিক আদালতে তার বিচার সাজিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আদালত কর্নেল তাহেরকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের গৌরব উল্লেখ করে বলেন, তার হত্যাকাণ্ড দেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। কর্নেল তাহেরের ফাঁসিকে `নিরঙ্কুশ খুন` বলে অভিহিত করেছেন আদালত।

কর্নেল আবু তাহের ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর ভারতের আসামের বদরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রামে। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় চট্টগ্রামের ফতেহাবাদ স্কুল থেকে। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে স্নাতক পাস শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন ১৯৬০ সালে।

ওই বছর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে কর্নেল তাহের পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। ১১ নম্বর সেক্টরের তিনি ছিলেন সেক্টর কমান্ডার। জামালপুরে পাকিস্তানি সেনাঘাঁটিতে আক্রমণ পরিচালনার সময় আহত হন। পরবর্তী সময়ে `বীর উত্তম` খেতাব পান। পরে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাসে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন।

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তিনি সিপাহি-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন। এরপর ১৯৭৫ সালের ২৪ নভেম্বর গ্রেফতার হন। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি হয়।

কর্নেল আবু তাহেরের ৩৭তম হত্যা দিবস উপলক্ষে আজ ২১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বিকাল ৪টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এ আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সিপিবি নেতা হায়দার আকবর খান রনো, কর্নেল তাহের সংসদের সাবেক সভাপতি কামাল লোহানী, ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা, ইমরান এইচ সরকার।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। গতকাল কর্নেল তাহের সংসদ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কর্নেল তাহের দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানানো হয়।

নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার কৃতী সন্তান শহীদ কর্নেল আবু তাহেরের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রবিবার নেত্রকোনায় জাসদসহ বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

পূর্বধলার কাজলায় সকাল সাড়ে ৮টায় তাহেরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

 

 

রাইজিংবিডি/ এমএএস

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়