ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

লক্ষ্মীপুরে মিশ্র ফলের বাগান করে সফল পিতা-পুত্র

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৭, ১৫ জুলাই ২০২৪  
লক্ষ্মীপুরে মিশ্র ফলের বাগান করে সফল পিতা-পুত্র

খুরমা খেজুর চাষ করে ২৪ লাখ টাকা লোকসানের শিকার হলেও মিশ্র ফলের বাগান করে শতভাগ সফলতা পেয়েছেন প্রবাস ফেরত পিতা-পুত্র।

বর্তমানে তাদের বাগানে আগাম জাতের আম্রপালি, কাটিমন ও ব্যানানা আম, মাল্টা, কমলা, ড্রাগন, পেঁপে, নারিকেল ফল রয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার গঙ্গাপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত পিতা সৈয়দ আহাম্মদ ও পুত্র সাইফুল ইসলাম উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের গোজা এলাকায় নিজস্ব দুই একর জমিতে এই মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন।

সৈয়দ আহাম্মদ জানান, তিনি জীবিকা অর্জনের জন্য সৌদি আরব যান। সেখানে তিনি মাজরায় (কৃষি খামারে) কাজ করতেন। পরবর্তীতে তার বড় ছেলে সাইফুলকেও নিয়ে যান। পিতাপুত্র কাজ করে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে শাকচরে দুই একর ধানি জমি কেনেন। পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে তারা সে জমির মাটি ভরাট করে আরব্য মরুভূমির ফল খুরমা খেজুর চাষ করেন। দেশে নতুন এই ফল চাষ করে সফল ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও সে স্বপ্ন তাদের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ফল না ধরায় তাদের ২৪ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়। ধারদেনা করে তারা পথে বসার উপক্রম হলেও হার মানতে রাজি হননি ছেলে সাইফুল ইসলাম।

পরবর্তীতে খুরমা খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলে সে জমিতে নিজের মেধা ও বুদ্ধি খাটিয়ে মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। শুরুতে তারা তাদের জমির চারপাশে নারিকেল গাছ রোপণ করেন। বর্তমানে তাদের বাগানে ১৫০টি নারিকেল গাছ ফল দিতে শুরু করেছে। পরবর্তীতে তারা মূল বাগানকে ভাগ ভাগ করে একটি খণ্ডে ড্রাগন, একটি খণ্ডে আম, একটি খণ্ডে মাল্টা, একটি খণ্ডে মাল্টার চারা লাগিয়ে ফলের বাগান গড়ে তোলেন। পাশাপাশি এসব ফলের গাছের ফাঁকে ফাঁকে তারা পেঁপে গাছ লাগান। গত চার বছর ধরে তাদের লাগানো ফলের গাছে ফল ধরছে। ফল বিক্রি করে তাদের ভালো আয়ও হচ্ছে। তাদের বাগান থেকে ফল ব্যবসায়ীরা ফল নিয়ে বিক্রি করছেন। কেমিক্যাল মুক্ত গাছে পাকা ফল দেখতে অনেকেই তাদের বাগানে গিয়ে ফল কিনছেন ও খাচ্ছেন।

সৈয়দ আহাম্মদ জানান, তিনি পড়ালেখা তেমন জানেন না। তার ছেলে সাইফুল ইন্টারনেট ঘেঁটে ও ইউটিউবে ভিডিও দেখে এ চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদেরকে কৃষি অফিস পরামর্শ ও কোডেক নামের একটি এনজিও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, কেউ তাদের মতো বাগান করতে চাইলে তারা সব রকমের সহায়তা দিবেন। গত বছর তারা ফল বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা আয় করছেন। এবার আরো বেশি টাকা আয় হবে। তারা এখন স্বাবলম্বী।

জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক সোহেল মো. সামছুদ্দীন ফিরোজ বলেন, সাইফুলকে গত সপ্তাহে কোডেক জেলার শ্রেষ্ঠ ফল চাষির পুরস্কার দিয়েছে। কৃষি বিভাগ তাকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সাইফুলদের মতো অন্য কেউ ফলের বাগান করতে চাইলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।

লিটন/ফয়সাল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়