১১ কোটি টাকা অনুদান দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মেধাবী, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী, রোগাক্রান্ত ও দুর্ঘটনাকবলিত শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১১ কোটি টাকা অনুদান দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতি বছর এ অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে ৬ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান দেওয়ার বিষয়ে একটি নীতিমালা আছে। বর্তমানে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চলছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আগামী ১৫ মার্চ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের ক্ষেত্রে ১০ মার্চ পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্বাচিতদের ব্যাংক হিসাবে অনুদানের টাকা পাঠানো হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগে এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়ে থাকে। এ কমিটিতে একজন অতিরিক্ত বা যুগ্ম সচিব আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ১ ফেব্রুয়ারি ও কারিগরিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ৯০ হাজার এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগে প্রায় ৪০ হাজার আবেদন জমা হয়েছে। সার্ভার জটিলতার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে আবেদনের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ, শিক্ষক-কর্মচারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিকে ৯ হাজার, স্নাতক/সমমান পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। মোট অর্থের ২০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ১০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

জানা গেছে, গত বছর ষষ্ঠ থেকে স্নাতক শ্রেণির ৮ হাজার ১৮৬ জন শিক্ষার্থী, ৩০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমপরিমাণ শিক্ষককে ৬ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার, শিক্ষক-কর্মচারীকে ২০ হাজার, এবতেদায়ি (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) পর্যায়ের শিক্ষার্থী প্রতি ৩ হাজার, দাখিল/এসএসসি/ভোকেশনাল পর্যায়ে জনপ্রতি ৫ হাজার, আলিম/এইচএসসি (বিএম)/ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ের প্রতি শিক্ষার্থী ৬ হাজার এবং ফাজিল ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ে ৭ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।

এদিকে, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ফেসবুক এবং ইউটিউবে এমন ভুয়া তথ্য প্রচার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ গুজবের পর দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। এ গুজব রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্তকবার্তা জারি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। কারা এ টাকা পাবেন, সে বিষয়ে নীতিমালা আছে।’