আবারও চালের বাজার চড়া
মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম
তেল, চিনি, ডালের পর এবার বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা।
পাইকারি বাজারে আজকে নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা। মিনিকেট ৬৪ টাকা, যা ছিল ৬২ টাকা। আটাশ চাল ৪৮ টাকা, গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৪৪ টাকা। পাইকারি বাজার থেকে ৫০০ গজ দূরের খুচরো বাজারে এসব চাল বিক্রি হয় ৪ থেকে ৮ টাকা বেশি কেজিতে।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কারওয়ান বাজারে পাইকারি ও খুচরো চাল ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
লাকসাম ট্রেডার্সের মালিক, পাইকারি চাল ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে মিডিয়ার লোক, ম্যাজিস্ট্রেট সবাই জানতে চান। আমরা কী করবো? বেশি দামে কিনি, বেশি দামে বেচি। দেশে এত চাল থাকার পরও কেনো দাম বাড়ছে, এটা কেবল মিলমালিকরা বলতে পারবে।’
ঢাকা সেনানিবাস এলাকা থেকে কারওয়ান বাজারে চাল কিনতে আসা সাদ আহমেদ বলেন, ‘ভেবেছি, কচুক্ষেতের চেয়ে এখানে দাম কম হবে। অথচ এই বাজারেও একই দাম চাচ্ছে। তাহলে এখান থেকে চাল কিনে গাড়ি ভাড়া দিয়ে নিয়ে লাভ কী? মিল মালিকদের দোষ দেয় পাইকাররা। আসলে সবাই মিলে একটা সিন্ডিকেট। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এটা কন্ট্রোল করা জরুরি।’
আরেক পাইকারি চাল ব্যবসায়ী ফাতেমা রাইছ এজেন্সির মালিক রহমত মিয়া। তিনি বলেন, ‘সবকিছু কন্ট্রোল করছে মিলমালিকরা। যখন তখন খেয়াল খুশিমতো যাতে এরা চালের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য এদেরকে আটকানোর পথ একটাই; সরকারিভাবে ভালো চাল আমদানি করা এবং এদের মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সে চাল বাজারে ছেড়ে দেওয়া।’
মান্নান রাইছের আব্দুল মান্নান চালের মূল্য বৃদ্ধি এবং এর প্রতিকার বিষয়ে বলেন, ‘মিলমালিক এবং ধান ব্যবসায়ীরা মিলে চালের বাজার কন্ট্রোল করছে। ধানচাষ করার জন্য মিলমালিকরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কৃষকদের দাদন দেয়। ধান ওঠার পর অনেক কম দামে সেই ধান কিনে নেয়। সেই ধান পৌঁছে দেন মিলমালিকদের কাছে। ওরা আবার একটা সিন্ডিকেট করে তাদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়, কমায়। মাঝখান থেকে কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পায় না।’
চালের বাজার মনিটরিং, মূল্য বৃদ্ধি, সিন্ডিকেট- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সরবরাহ, বণ্টন ও বিপণন বিভাগের পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের চাহিদার তুলনায় বেশি ধান উৎপন্ন হয়। আমরা প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনি। সেটা থেকে চাল করে বাজারে ছাড়ি। নিয়মিত মনিটরিং করার পরও পাইকারি বাজারে চালের দাম কমছে না।’
তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা ব্যবসায়ী ও মিলমালিক উভয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যবসায়ীরা এর জন্য মিলমালিকদের দায়ী করছেন। আর মিলমালিকরা দায়ী করছেন পাইকারদের। মাঝখানে সাধারণ মানুষের অবস্থা খারাপ। আমরা চেষ্টা করছি, আরও ক্লোজলি বাজার মনিটরিং করে চালের বাজার সহনীয় করতে।’
ঢাকা/এনএইচ
আরো পড়ুন