ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পরবর্তী প্রজন্মকে আর পেছনে ফিরে দেখতে হবে না

সালমা খাতুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরবর্তী প্রজন্মকে আর পেছনে ফিরে দেখতে হবে না

প্রতিভা, পরিশ্রম ও একটি দল হয়ে খেলতে পারলে কি করা সম্ভব সেটি আমাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দল দেখিয়েছে। এ বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য তারা অনেক বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় যা করেছে সেটি আমাদের গর্ব করার সুযোগ করে দেয়। তবে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় কি করতে পারি সেদিকে এখন তাকিয়ে আছি।

পুরো দল এ আসরের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা অনেক বড় এক মঞ্চ। আমরা যে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, সবাইকে দেখানোর জন্য এটা আমাদের অনেক বড় সুযোগ। আমরা এ নিয়ে খুব উদগ্রীব।

গত বিশ্বকাপের পর থেকে আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিশ্বাস বেড়েছে। গত দুই বছরে আমাদের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরে থাকা কিছু বড় দলকে হারিয়েছি আমরা। আমাদের বর্তমান দলে অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রতিভার এক মিশ্রণ গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে মূল দল একসঙ্গে খেলছি। এ অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ হতে পারে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটের সঙ্গে যদি আমরা আক্রমণাত্মক এবং বাধাহীন ক্রিকেট খেলতে পারি তবে ম্যাচে সুবিধাজনক অবস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারবো। এর সঙ্গে যদি আমরা সব প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে পারি তবে ফলাফল নিজ দায়িত্বে কথা বলবে। আমি আমার দলকে বলেছি, শেষ বল অর্থাৎ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেনো হাল যেন না ছাড়ে।

আমাদের গ্রুপে বিশ্বের সেরা দল রয়েছে। কিন্তু যখন আপনি এমন একটা টুর্নামেন্ট খেলতে আসবেন, সেখানে আপনি শক্তিশালী বা দূর্বল দল বলে কিছু ধরে নিতে পারবেন না। আমরা ২০১৮ সালের এশিয়া কাপ জিতেছি শুধু নিজেদের উপর বিশ্বাস রেখে, বাকি সব ভাবনা আড়াল করে। আমরা একই মানসিকতা নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ খেলতে চাই।

আমরা অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে টুর্নামেন্ট শুরুর বেশ আগে এসেছি। আমাদের মাত্র দুজন খেলোয়াড়ের এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা গোল্ড কোস্টে ক্যাম্প করেছি। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিয়ে টুর্নামেন্টে নামছি। এটা আমাদের জন্য দারুণ উত্তেজনাকর মুহূর্ত। সবাই এখন চাঙা ও আত্মবিশ্বাসী।

নারী দলের অধিনায়কত্ব করা আমার জন্য বিশাল সম্মানের। আমি নিজেকে ভাগ্যবান দাবি করছি। বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল জাতি, যারা দলকে ভালোবাসে এবং ভালো কিছুর প্রত্যাশা করে। সেখানে আমাকে এমন দায়িত্ব দেওয়া আমার জন্য বিশেষ কিছু।

এই আবেগের মানে কিন্তু এ নয় যে, আমাদের জন্য ব্যর্থতা বলে কোনো শব্দ নেই। আমরা জানি কিছু দলের চেয়ে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আমরা এখন মাঠে প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পারি। আমরা এটা বলতে পারি কোয়ালিফাই করার জন্য যা প্রয়োজন তা আমরা করবো।

এখন পুরো বিষয়টি ফিটনেস ও চাপ সামলানোর উপর নির্ভর করে। এখনকার সময় এগুলো ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে সহায়তা করে। এগুলো এখন বড় এবং বাকি দলগুলোর মধ্যে ফারাকের মাপকাঠি হিসেবে মানা হয়।

সবসময় সেরা খেলোয়াড়ররাই আপনাকে ম্যাচ জেতাবে না। কিছু সময় যে কারো কাছে সুযোগ আসতে পারে। সেটা কাজে লাগাতে হবে।

তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো বড় দলগুলোর বিপক্ষে আমরা কি করতে পারি সেদিকে নজর দেয়া। আর নিজেদের কিভাবে উপরের স্তরে নিতে পারি, সে চেষ্টা করা।

আমরা সবসময় সেরা দলগুলোর বিপক্ষে আরো বেশি ম্যাচ খেলতে চাই। এর ফলে দলের খেলার মান আগের চেয়ে বাড়ানো সম্ভব হবে। আমাদের সুযোগ সুবিধা প্রতি সময়ে বেড়ে চলছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নারী ক্রিকেটকে অনেক সমর্থন করছে।

আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সেরা হতে আমাদের সব ধরণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আর পিছনে ফিরে দেখতে হবে না।

তথ্যসূত্র: আইসিসিতে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সালমা খাতুন।

 

ঢাকা/কামরুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়