ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিবেচনায় আছেন মোস্তাফিজও

চট্টগ্রাম থেকে ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২২:৫০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বিবেচনায় আছেন মোস্তাফিজও

‘টেস্ট দলের পরিকল্পনার অংশ নয়’ বলে যাকে ঠিক এক বছর আগে লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তিনিই এখন টেস্ট দলের বিবেচনায়। চট্টগ্রামে মোস্তাফিজুর রহমানকে সেরা একাদশে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোই জানালেন, বাঁহাতি পেসারকে খেলানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে টেস্ট স্কোয়াডে।

লাল বলের বোলিংয়ে ধার না থাকায় গত বছর মোস্তাফিজকে বিবেচনায় রাখেনি টিম ম্যানেজেমেন্ট। পাকিস্তান সফরে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কোচ জানিয়েছিলেন, স্কিলের উন্নতি না হলে মোস্তাফিজকে রাখা হবে না টেস্ট দলে। অবশ্য কাটার মাস্টারের এই ফরম্যাটে আগ্রহ ছিল সামান্য। গুঞ্জন আছে, ২০১৯ সালে টেস্ট দলে তাকে না রাখতে নির্বাচকদের অনুরোধও করেছিলেন।

অথচ করোনায় পাল্টে গেলো সব। দীর্ঘ বিরতিতে মোস্তাফিজ সাদা ও লাল বলে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। মাঠে ফিরে ইনসুইং ডেলিভারি নিয়ে ওটিস গিবসনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাজ করেন এ বাঁহাতি। তাতে হয়েছেন শাণিত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইনসুইং ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন তিনি। যেভাবে ডমিঙ্গো চাচ্ছেন সেভাবে হয়নি, তবে তার উন্নতিতে খুশি ডমিঙ্গো। এজন্য দলের সঙ্গে রেখে তাকে আরও পরিণত করা হচ্ছে। পাশাপাশি টেস্ট দলের জন্যও বিবেচনা করা হচ্ছে।

সোমবার ডমিঙ্গো বলেন, ‘দেখুন আমি বেশ আগেই বলেছিলাম, মোস্তাফিজ বল ভেতরে না সুইং করাতে পারলে টেস্ট ম্যাচে সমস্যায় পড়বে। সে আমাদের বোলিং কোচের সঙ্গে গত ৮-৯ মাস কঠোর পরিশ্রম করেছে এই বিষয়টি ভালোভাবে আয়ত্ত করতে। আপনারা ওয়ানডেতে দেখেছেন যে সে তা করতে পেরেছে। এখনও শতভাগ ধারাবাহিক না হলেও ইনসুইং করানোর ক্ষেত্রে তার বেশ উন্নতি হয়েছে।’

বাংলাদেশের কোচ আরও বলেছেন, ‘সে একজন দারুণ পারফর্মার, অভিজ্ঞ এবং অন্য বাঁহাতি পেসারের থেকে ভিন্ন। সে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের অফ সাইডে রাফ তৈরি করতে পারবে যা আমাদের অফ স্পিনারদের সাহায্য করবে। সুতরাং সে অবশ্যই এই টেস্টে একজন অপশন। সে খুবই ভালো অনুশীলন করেছে, সে ফিট এবং প্রাণবন্ত ছিল এবং তার স্কিলও আগের চেয়ে বেড়েছে। এবং গত ৮-৯ মাসের উন্নতির ভিত্তিতে আমি তাকে সামনে আমাদের টেস্ট স্কোয়াডের অংশ হিসেবে দেখি।’

২০১৯ সালের মার্চে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন মোস্তাফিজ। তিন বছর পর আবারও তাকে সাদা জার্সিতে দেখা যায় কি না সেটা দেখার। মোস্তাফিজ বাদে টেস্ট স্কোয়াডে আছেন আরও চার পেসার। নিয়মিত খেলা আবু জায়েদ রাহী ও ইবাদত হোসেনের সঙ্গে আছেন দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা হাসান মাহমুদ।

তবে চট্টগ্রামে পেসারদের খুব একটা সুযোগ দেখছেন না ডমিঙ্গো। উইকেটের কারণে চাইলেও তিনি দুই বা তিন পেসারকে খেলাতে পারবেন না। এমন আভাস দিয়ে রেখেছেন ডমিঙ্গো, ‘এটি একটি কঠিন বিষয়। কারণ আমাদের হাতে বেশ কিছু দারুণ তরুণ পেসার আছে। তাসকিন বেশ ভালো গতিতে বোলিং করছে। হাসান খুবই রোমাঞ্চকর। ইবাদত, রাহী খুবই ভালো করেছে। খালেদও আছে। কিন্তু চট্টগ্রামের পিচ আমরা গত দুই দিনে যতটা দেখেছি, তাতে পেসারদের হুমকিস্বরূপ মনে হয়নি। এটি দুর্ভাগ্যজনক যে পিচ এরকম।’

পিচ বুঝে বোলার নির্ধারণ করা হবে জানালেন কোচ, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা নিজেদের শক্তির জায়গা অনুযায়ী খেলবো। আমরা সিস্টেমের মধ্য দিয়ে পেসার বের করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেটা আমরা ওয়ানডেতে দেখিয়েছি। আমরা চাচ্ছি একটি পেসারদের গ্রুপ তৈরি করতে, কারণ দেশের বাইরে তারা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি আপনি পেসারদের সহায়ক নয় এমন উইকেটে তাদের নিয়ে আক্রমণ সাজান, সেটি বোকার মতো কাজ হবে এবং অভিষিক্ত কোনও পেসারের জন্য এমন পিচে খেলা কঠিন ব্যাপার।’

আদর্শ বোলিং লাইনআপ বাছাইয়ে আলোচনা করবেন বলে ডমিঙ্গো জানালেন, ‘আমরা নির্বাচকদের সঙ্গে আগামীকালকের (মঙ্গলবার) মধ্যে আলোচনা করবো পেস ও স্পিন মিলিয়ে একটি আদর্শ বোলিং লাইনআপের ব্যাপারে। আমরা আগামীকাল আবার কন্ডিশন ও পিচ পর্যবেক্ষণ করে একাদশ কেমন হবে সেটি নিশ্চিত করবো।’

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়