ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঢাকা লিগের হ্যাটট্রিক শিরোপা আবাহনীর

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ২৬ জুন ২০২১   আপডেট: ১৭:১৮, ২৭ জুন ২০২১
ঢাকা লিগের হ্যাটট্রিক শিরোপা আবাহনীর

আবাহনীর দেওয়া ১৫১ রানের জবাবে ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে  ধুঁকছিল প্রাইম ব্যাংক। প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস তখন একাই টানছিলেন রুবেল মিয়া। কিন্তু হাল ছেড়ে দেন ব্যক্তিগত ৪১ রানে। রুবেল আউট হয়ে গেলেও শেষ হয়ে যায়নি ম্যাচ। সাইফ উদ্দিনকে ১৯তম ওভারে পরপর চার-ছয় মেরে অলোক বাড়িয়ে দেন রোমাঞ্চ। তবে অলোকের শেষ ঝলকেও হাসতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। 

বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ স্পনসরড বাই ওয়ালটন-এর সুপার লিগের শেষ দিন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৮ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী লিমিটেড। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছে ঐতিহ্যবাহী দলটি। সব মিলিয়ে দেশের শীর্ষ ক্রিকেট লিগে এটি তাদের ২১তম শিরোপা। 

শনিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান করে মোসাদ্দেক হোসেনের দল। জবাবে প্রাইম ব্যাংক ৯ উইকেটে ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি। 

আবাহনী এর আগে ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা তিনবার ঢাকা লিগের শিরোপা জেতে। তবে তখনো লিস্ট ‘এ'-র মর্যাদা পায়নি ঢাকা লিগ। ২০১৩-১৪ আসরে লিস্ট ‘এ’-র মর্যাদা পায় ঢাকা লিগের খেলা। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্স।

প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস মেরামতের দায়িত্বটা ছিল রনি তালুকদারের কাঁধে। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে হাসেনি রনির ব্যাট। সাইফউদ্দিনের লাফিয়ে উঠা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে পুল করতে গিয়ে  এক্সট্রা কাভারে মেহেদী হাসান রানার হাতে ক্যাচ দেন রনি (১)। পরে রুবেল মিয়া ও এনামুল হক বিজয় খেলার হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আরাফাত সানিকে ডিপ এক্সট্রা কাভারে ৬ মেরে বিজয় আভাস দেন দারুণ কিছুর।

কিন্তু আবারো বাধা হয়ে দাঁড়ান সাইফ। ১২ বলে ১৩ রান করে প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক সাজঘরে ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক। বিজয় ফেরার পর প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসে জোড়া পতন ঘটে। ৮ রানের ব্যবধানে ফেরেন রকিবুল হাসান (৪) ও মোহাম্মদ মিথুন (৬)। এক প্রান্তে যখন আসা যাওয়ার মিছিল তখন আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিলেন রুবেল।

ওপেনিংয়ে নেমে রুবেল খেলেন ৪৩ বলে ৪১ রানের ইনিংস। তানজিম হাসান সাকিবের বলে যখন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তখন দলের রান ৯৯। বল বাকি ছিল ২৬টি। রুবেলের সঙ্গে ম্যাচের ভাগ্য শেষ হলেও ঝলক দেখিয়ে কিঞ্চিত আশা জাগিয়েছিলেন অলোক কাপালি। সাইফকে  ফাইন লেগে চার মেরে পান প্রথম বাউন্ডারি; তানজিমকে ওয়াইড লং অনে ছয় মেরে বাড়িয়ে দেন রোমাঞ্চ। এরপর সাইফ উদ্দিনের ওভারে আবারও চওড়া হন অলোক। ১টি ছয় ও ১টি চারে কমান রানের ব্যবধান।

শেষ ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন হলেও নিতে পেরেছেন মাত্র ৭ রান। প্রথম ৩ বল ডট। যদিও প্রথম বল নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট বিতর্ক। শহীদুলের ফুলটস বল হাই নো হলেও আম্পায়ার সৈকতের চোখ এড়িয়ে যায়। চতুর্থ বলে লং অন দিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন অলোক। পরের বল ব্যাট-বলের টাইমিং না মেলানোয় প্রাইম ব্যাংকের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। অলোক অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৩৪ রান করে। তার ইনিংসে ৩টি ছয় ও ২টি চারের মার ছিল। 

আবাহনীর হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরষ্কারও ওঠে এই অলরাউন্ডারের হাতে।

এর আগে আবাহনীর ব্যাটিংও ছিল নড়বড়ে। দ্রুত উইকেট হারানোর পর নাজমুল হোসেন শান্ত-মোসেদ্দেক হোসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দলটি। এরপর শান্ত-আফিফ ফিরে যাওয়ায় তিনি এখন একাই লড়ছিলেন।

শান্ত সর্বোচ্চ ৪০ বলে ৪৫ রান করেন। মোসাদ্দেক খেলেন ৩৯ বলে ৪০ রানের ইনিংস। দুজনের জুটি থেকে আসে ৭০ রান। শেষ দিকে সাইফউদ্দিনের ১৩ বলে ২১ রানের ঝড়ে দেড়শ রান স্পর্শ করে দলটি। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন রুবেল হোসেন। মোস্তাফিজ ইনিংসের শেষ ওভারে ১৬ রান দিয়েছিলেন। তাতেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়