আ’ লীগের সভাপতি ও সম্পাদক হলেন যুবদল ও বিএনপি নেতা!
পটুয়াখালী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
অবশেষে বিএনপির দুই নেতাকে অন্তর্ভূক্ত করে সম্পন্ন হলো পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি।
পটুয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মুহিবুর রহমান মুহিব রোববার ধানখালী ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করেন।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে প্রাক্তন যুবদল নেতা শাহজাদা পারভেজ টিনু মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ইউনিয়ন বিএনপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধাকে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা নেতৃবৃন্দরাও।
এর আগে দলে বিএনপির এই দুই নেতাকে ঠেকাতে ধানখালীর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভের ডাক দিলে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু রোববার স্থানীয় এমপির একতরফা কমিটি ঘোষণা করেন।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ব কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি ওয়াহাব উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক যুবদল নেতা শাহাজাদা পারভেজ টিটু মৃধা ২০০৮ সালে মিয়ানমারে সার পাচারকালে পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাবাসের পর দীর্ঘদিন ঢাকায় ছিলেন। তার পিতা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আলতাব মৃধা ২০০৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট চলাকালে পুলিশের রাইফেল ছিনতাই করে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যায়। সম্প্রতি এলাকায় এসে অর্থের বিনিময়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগে প্রবেশ করে। স্বেচ্ছাসেবক লীগে যোগ দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি ও সুদ কারবারে লিপ্ত হয়। এলাকার সাধারণ মানুষ টিনুর কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে প্রধানমন্ত্রী, দলের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। এতে কোন প্রকার প্রতিকার না পেয়ে ধানখালী আওয়ামীর বড় একটি অংশ এবং সাধারণ মানুষ টিনুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, মানববন্ধন,সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে।
অভিযোগকারীরা আরো বলেন-ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘোষণা দিলে টিনু দলে প্রবেশের পায়তারা চালায়। এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল লীগের তালিকা তৈরি করে উপজেলা নেতৃবৃন্দের কাছে দাখিল করে অভিযোগকারীরা।এরই ধারাবাহিকতায় উপস্থিত কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে টিনু ২য় স্থানে থাকলেও তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্য বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে কয়েকদফা আন্দোলন ও নানা ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে উপজেলা নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
ওই অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন- নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। অনুপ্রবেশকারীদের হুমকিতে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। কিন্তু কোন প্রকার দলের নেতাকর্মীকে অবহিত ছাড়াই রোববার কলাপাড়া আসনের সাংসদ মুহিবুর রহমান মুহিব একতরফা কমিটি ঘোষণা দেয়।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান বলেন- ‘এমপি মহোদয় ধানখালী ইউনিয়নে যে কমিটি দিয়েছেন তা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এটা মোটেই সঠিক নয়। সম্মেলন স্থগিত করা হলে তিনি অগোচরে কমিটি ঘোষণা করেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেন বলেন- ‘দলকে অবহিত না করে তিনি একতরফা কমিটি দিতে পারেন না। তাছাড়া প্রকৃত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি ঘোষণা করায় দলের বিভাজন সৃষ্টি হবে। এটা তিনি ঠিক করেননি।’
পটুয়াখালী /বিলাস দাস/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন