লালদীঘিতে ২৪ হত্যা: ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও জেলা দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন এই আদেশ দেন। মৃতুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পুলিশের তৎকালীন হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ ও ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল। জেসি মণ্ডল ছাড়া অন্য আসামিরা রায় ঘোষণাকালে আদালতে ছিলেন।

মামলার প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম মারা গেছেন। ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল ঘটনার পর থেকে নিরুদ্দেশ। তিনি ছিলেন কোতোয়ালি অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর।

১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি লালদীঘি মাঠে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৪ জন মারা যায়। আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ।

নিহতরা হলেন- মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন চৌধুরী, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া, মো. কাসেম, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ ও শাহাদাত।

১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে এই মামলা করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পরিচালনায় গতি আসে। আদালতের আদেশে মামলার তদন্তের ভার পড়ে পুলিশের সিআইডির বিভাগের ওপর।

১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি। আবার আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে আসামি করে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ১৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৫৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

 

 

রেজাউল/বকুল