কৃত্রিম হাত চেয়ে দিলীপের আকুতি
বাদশাহ্ সৈকত, কুড়িগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
দিলীপ রায়। জন্মই যেন তার অভিশাপ। জানেন না জীবনের এ প্রান্তে এসে কী করতে হবে। কাজ করে জীবন বাঁচাতে চায়। কিন্তু উপায় নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে তার হাত দুটি কেটে ফেলতে হয়েছে। এখন কৃত্রিম হাত লাগাতে চান দিলীপ। অনেক টাকার দরকার। কিন্তু মায়ের সেই সামর্থ নেই। প্রতিদিন কাজ করে যা পান তা দিয়ে সংসারই ঠিকমতো চলে না। ছেলের জন্য মানুষের কাছে ছুটছনে যদি কিছু সহযোগিতা পাওয়া যায়।
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার গোড়াই পতিয়ায় বাড়ি দিলীপের। ছোটবেলা থেকে মা তাকে নিয়ে মামা বিশাদুরের বাড়িতে থাকেন। বাবা প্রাণ কুমার তার জন্মের পর মাকে ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর আর কোনো খোজঁ নেননি। মা সন্তানকে নিয়ে দিন মজুরের কাজ করে দিন কাটাচ্ছেন। জীবনের প্রয়োজনে কখনো মাটি কাটার কাজও করতে হচ্ছে।
মায়ের কষ্ট দেখে দিলীপ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে কাজের সন্ধানে গ্রামের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে চলে যান ঢাকায়। বিল্ডিংয়ের রড মিস্ত্রির হেলপার হিসেবে কাজ করেন। এক সময় নিজেই কাজ শিখেন। ৬/৭ বছর থেকে ঢাকায় বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে রডের কাজ করেন। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু তার কপালে সুখ হয়তো সহ্য হয়নি। কয়েক মাস আগে ঢাকার উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে এবিসি কোম্পানির বিল্ডিংয়ের কাজ করছিলেন।
সেদিন ছিল বৃহষ্পতিবার। দুপুরের পরে বিল্ডিং উপরে লোহার পাইপ তুলছিল দিলীপ। হঠাৎ করে হাত ফসকে ছিটকে পড়ে কারেন্ট এর তারের সাথে জড়িয়ে যায়। ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে সে জ্ঞান হারায়। পরে তাকে মৃত ভেবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা।
প্রায় তিন মাস ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নেন দিলীপ। সুস্থ হলেও তার দুই হাতের কবজি কেটে ফেলতে হয়। চিকিৎসার সময় প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়।
দিলীপ জানান, বর্তমানে সুস্থ হলেও তার দুই হাতের কব্জি নেই। এ অবস্থায় বাড়িতে বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। নতুন করে দুই হাত লাগাতে চান। এজন্য কয়েক লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু কোথায় এ টাকা পাবেন জানেন না সে। অনিশ্চিত জীবনের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় কৃত্রিম হাত লাগাতে দিলীপ সরকারসহ বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার (মোবাইল নং-০১৩২৪১১০৫৪৮) অনুরোধ জানিয়েছেন।
সৈকত/সাইফ
আরো পড়ুন