ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

‘প্রাণহানি না হলেও আর্থিকভাবে পঙ্গুপ্রায় দ্বীপবাসী’

তারেকুর রহমান, সেন্টমার্টিন থেকে  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫২, ১৫ মে ২০২৩   আপডেট: ২২:৩৫, ১৫ মে ২০২৩

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা। এখানে বসতবাড়ি, দোকানপাটের ছাউনি উড়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, মোখার তাণ্ডবে প্রাণহানি না ঘটলেও আর্থিকভাবে প্রায়পঙ্গু হয়ে গেছে দ্বীপবাসী। এ অপূরণীয় ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবে সেই চিন্তায় আছেন তারা।

সেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজখবর নিতে সেন্টমার্টিন যান কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

সোমবার (১৫ মে) বিকেলে সেন্টমার্টিনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। এর আগে বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে টেকনাফের কোস্টগার্ড জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ডের জলযান নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেন তারা।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখায় কক্সবাজারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো সেন্টমার্টিন। এখানে অধিকাংশ কাচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। তাদের নিয়ে আমাদের বর্তমান পরিকল্পনা হলো পুনর্বাসন করা। পুনবার্সনের জন্য যে ত্রাণ রয়েছে তা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সেন্টমার্টিনে আসা শুরু করবে।’

তিনি বলেন, ‘এই দুর্যোগে সরকার সব ধরণের সহায়তা দেবে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের। যাদের নগদ সহায়তা দরকার, যাদের গৃহনির্মাণ দরকার, চিকিৎসাসহ যাদের অন্যান্য সহায়তা দরকার; সবধরণের সহায়তা দেবে। এটি আমরা দ্বীপবাসীকে আশ্বস্ত করেছি।’

সেন্টমার্টিন দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, সেন্টমার্টিনের ৮০ ভাগ মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের প্রাণহানি না হলেও আর্থিকভাবে প্রায় পঙ্গু হয়ে গেছে। এখানে যারা দরিদ্র তাদের কিছুই নেই। যারা ত্রাণ দিচ্ছেন, এগুলোর যদি সঠিক ব্যবহার হয়; তবে সেন্টমার্টিনবাসীর অনেক উপকার হবে। যদি জনপ্রতিনিধি বা অন্য কারো হাতে এই ত্রাণ পৌঁছে, তবে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে ঘরে ত্রাণগুলো পৌঁছাবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রী ও সহায়তা প্রশাসনের লোকদের মাধ্যমে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছানোর অনুরোধ করেন তিনি। 

পশ্চিমপাড়ার ব্যবসায়ী তৈয়ব উল্লাহ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ করা যাবে না। অনেকের বাড়িতে এখনো রান্না হয়নি। অনেকের বাড়ির আসবাবপত্র বাইরে বৃষ্টিতে ভিজছে। বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাদের বাসস্থান ও সহায়তার দরকার।’

সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখায় দ্বীপবাসীর বিরাট ক্ষতি হয়েছে। মোখার বাতাসে এ দ্বীপের ৭০০ বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ২৫০ থেকে ৩০০ সেমিপাকা ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে বাতাসে। এবং ১০০ এর বেশি দোকানপাট তছনছ হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে তারা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে ও অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি করেছি মুজিববর্ষের যে ঘরবাড়ি অসহায়দের জন্য বরাদ্দ রয়েছে, দ্বীপের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোকে যেন এসব ঘরবাড়ি দিয়ে সাহায্য করা হয়।’
 

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়