ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

সিলেটে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতিজাকে কুপিয়ে হত্যা

সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ৫ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ২০:১৯, ৫ এপ্রিল ২০২৪
সিলেটে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতিজাকে কুপিয়ে হত্যা

সিলেটের আলোচিত সাজিদ বাহিনীর সদস্যদের হামলায় আহত মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমান আলীর ভাতিজা তাজুল ইসলাম (৪০) মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগে, গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাজুলসহ তার পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে জখম করে সাজিদ বাহিনীর সদস্যরা।

নিহত তাজুল ইসলামের বাড়ি জালালাবাদ থানার হাটখোলা ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামে। তার বাবার নাম উস্তার আলী।

এলাকাবাসী জানান, উত্তর সিলেট তথা বৃহত্তর শিবের বাজার এলাকার ‘আলতা বাহিনী’ ও ‘সাজিদ বাহিনী’ নানা অপকর্মের কারণে একসময় আলোচিত ছিল। আলতা বাহিনীর প্রধান আলতা ও তার ছেলের মৃত্যুর পর ‘সাজিদ বাহিনী’ এলাকায় পুনরায় সংঘটিত হচ্ছে। এর আগে এই দুই বাহিনীর প্রধান আলতা ও সাজিদকে ভালো হওয়ার শর্তে স্থানীয় হাটখোলা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বানিয়েছিলেন এলাকাবাসী। কিছু দিন ভালো হয়ে চললেও মেম্বারের মেয়াদ চলে গেলে পুনরায় ডাকাতি , মাদক বিক্রি শুরু করে সাজিদ বাহিনী। তার নেতৃত্বে ভাগনা মাখন, দুদু ও হামিদ বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

নিহতের চাচা আজবর আলী জানান, সাজিদ বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমান আলীর পরিবারের বেশ কিছু জমি দখল করে রেখেছে। সম্প্রতি আরো কিছু জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরই জেরে গত ৩১ মার্চ ইফতারের আগে সাজিদ আলীর নেতৃত্বে মাখন, দুদু, আমীরসহ কয়েকজন তার ওপর হামলা চালায়। এসময় তাকে বাঁচাতে জামাল ও ভাতিজা তাজুল এগিয়ে আসেন। তখন তাদেরকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সাজিদ বাহিনীর লোকজন। তাজুলের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তাকে প্রথমে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে যাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তাজুল মারা গেছে। 

নিহতের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম জানান, তিনি দুবাই ছিলেন। সাজিদ বাহিনীর হামলায় বড় ভাই গুরুতর আহত হওয়ার খবর পেয়ে দেশে আসেন। তিনি বলেন, আমাদের জমি দখল করে রেখেছে এই বাহিনী। আরো জমি দখলের চেষ্টা করছে তারা। এ কারণে তারা তাজুলকে হত্যা করেছে। 

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ৪/৫দিন আগে মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে একজন মারা গেছেন। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, নিহত তাজুল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সন্তান কিনা জানা নেই। আসামি ধরতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। 

প্রসঙ্গ, আজমান আলী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি সুনামগঞ্জে সীমান্তে সম্মুখ যুদ্ধে শহিদ হন। কয়েক বছর আগে সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামে তার কবর স্থনান্তর করা হয়। 

নূর/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়