ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এমপি আনার হত্যা: কোটচাঁদপুর পৌর মেয়রকে আটকের দাবি ডরিনের

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২১, ২৫ মে ২০২৪   আপডেট: ২১:৫৬, ২৫ মে ২০২৪
এমপি আনার হত্যা: কোটচাঁদপুর পৌর মেয়রকে আটকের দাবি ডরিনের

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন এমপি আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের লাশ খুঁজে দেশে আনা, হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও মুল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। শনিবার (২৫ মে) দুপুরে নিহত সংসদ সদস্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
 
অবস্থান কর্মসুচি শেষে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু, সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী ও কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম।

গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ আসামি ৮ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তারা হলেন, আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান।

গত ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলানগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন নিহত আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, এমপি আনোয়ারুল আজীম খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন। শাহীন ও আনোয়ারুল আজীম ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমপি আনার হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দিতে হবে। এই হত্যার সঙ্গে আরও যদি কেউ জড়িত থাকে, তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা।

এদিকে, দুপুরে ঝিনাইদহ সংরক্ষিত আসনের এমপি পারভিন জামান কল্পনা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু নিহত এমপি আনারের বাসভবনে যান এবং এই নৃশংস হত্যার নিন্দা জানান। তারা এ সময় আনারের স্ত্রী শেফালী ফেরদৌসী ও কন্যা ডরিনকে শান্ত্বনা দিয়ে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। 

নিজ বাসার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এমপি আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। হত্যার পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে এমপি আনারের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা কাউন্সিলর ছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় ক্রিকেট, ফুটবল খেলা করে বেড়াতেন। তিনি (আক্তারুজ্জামান) কোটচাঁদপুর থেকে কালীগঞ্জে আসতেন ক্রিকেট খেলতে। ওই সময় একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। এছাড়া তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কোনো সম্পর্ক আছে বলে আমার জানা নেই।’

ডরিন বলেন, ‘যে আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা স্বীকার করেছেন ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে বাবাকে মারেন। তারা প্রফেশনাল। এই কাজই তারা করে। আক্তারুজ্জামান শাহীন তাদের এই কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই হত্যার প্রধান আসামি শাহীনকে গ্রেপ্তার করাই এখন আমার চাওয়া। তার কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যার কারণ বেরিয়ে আসুক যে ব্যবসায়িক না রাজনৈতিক কারণে বাবাকে মারা হয়েছে।’ 
 
ডরিন আরও বলেন, ‘তার বাবা ৩৫ বছর এই জনপদে রাজনীতি করেছেন। এর আগেও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই হত্যার পিছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। যারা ব্যবসায়িক কারণ দেখিয়ে নিউজ করছেন তারা বিষয়টি ডাইভার্ট করার চেষ্টা করছেন। হতেও পারে রাজনৈতিক কারণে বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। এমন কোনো নিউজ করবেন না যেন আমার বাবার সম্মান ক্ষুন্ন হয়।’ 
 
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে মনগড়া খবর প্রচার হচ্ছে বাবাকে নিয়ে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এর আগে কেন নিউজ করেননি আপনারা। এতে আমার বাবার ইমেজ ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।’

এমপি কন্যা বলেন, ‘আক্তারুজ্জামান শাহীনের ভাই সহিদুজ্জামান সেলিম কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র। এর আগেও শাহীন বিভিন্ন মানুষকে মেরেছে। এত কিছুর পরও তার বড় ভাই কিছুই জানতেন না? একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তার ভাইয়ের ব্যাপারে একটা পদক্ষেপ নিতে পারতেন না?’ 

এ সময় তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তার ভাইকেও (মেয়র) আইনের আওতায় আনা হোক, জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আমার বাবাকে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও কেন মেয়রকে আটক করা হয়নি?’

সোহাগ/বকুল 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়