ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ফেনীতে গৃহহীন অনেকে

ফেনী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৩, ২৭ মে ২০২৪  
ফেনীতে গৃহহীন অনেকে

ফেনীতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা সোনাগাজী উপজেলায় অনেক বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত থেকে ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দুর্গতরা। ঝড়ের সময় খুঁটি ও তার ছিড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন জেলার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ গ্রাহক। 

সোনাগাজী দক্ষিণ চরচান্দিয়া এলাকার মো. রাসেল মিয়া বলেন, দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। ঘূর্ণিঝড়ে আমার মাথা গোঁজার একমাত্র সম্বল ভেঙে গেছে। এখন আমি খোলা আকাশের নিচে রয়েছি। মা, বোন, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।  

আরো পড়ুন:

মরণ জলদাস নামের এক জেলে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে জেলেপাড়ার অনেকের ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। প্রশাসনের লোকজন আশ্রয়ণে যেতে বললেও সম্পদের মায়ায় অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরেই ছিলেন। 

সোনাগাজীর দক্ষিণ চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. এসকান্দার বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে তীব্র বাতাসে দক্ষিণ চরচান্দিয়া এলাকায় অন্তত ২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে কিছু ঘর ভেঙে গেছে। স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ণে নেওয়ার কাজ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা হবে। 

ফেনী শহরের মিজান রোডের বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, গতকাল রাত থেকে আজ দুপুর গড়িয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সারাদিনে মাত্র দেড় ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ ছিল। তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিতে ঘরে বসেই সময় কাটাচ্ছি। 

মিজানুর রহমান নামের বাসিন্দা বলেন, গতকাল রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। বাতাসে কিছু গাছ উপড়ে পড়ে কিছু ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও এখনো ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৃষ্টিতে বের হওয়ার উপায় নেই। 

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, রাত থেকেই ঝোড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে পুরোপুরি সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। 

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, উপজেলায় বড় ধরনের ক্ষতি কিংবা হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। বাতাসে কিছু ঘরের টিন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে না আসায় এখনো ক্ষতির চূড়ান্ত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। 

ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল রোববার রাত থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বাঁধের পরিস্থিতি ও নদীর পানি বৃদ্ধির গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে শুকনো খাবারের জন্য ২ লাখ টাকা, ২ মেট্রিক টন চাল, ১ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ১ লাখ টাকা গো-খাদ্য ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়