ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ফেনীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পদত্যাগ করলেন প্রধান শিক্ষক

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৩, ১৮ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২১:০৪, ১৮ আগস্ট ২০২৪
ফেনীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পদত্যাগ করলেন প্রধান শিক্ষক

শহীদ মেজর সালাহউদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার

শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন ফেনী শহরের শহীদ মেজর সালাহউদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে পদত্যাগপত্রে সই করে তিনি একই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অর্চনা রানী চক্রবর্তীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।  

এর আগে, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে আজ সকাল ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা শিক্ষক মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তারসহ অন্যান্য শিক্ষকদের ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হন শামীমা আক্তার। 

আরো পড়ুন:

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী। দলীয় পরিচয়ে তিনি এখানে প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন। তিনি আসার পর উন্নয়ন তো দূরে থাক বরং বিদ্যালয়ের অবনতি হয়েছে। দলীয় প্রভাব দেখিয়ে তিনি বিদ্যালয়ে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। সেজন্য আমরা তার পদত্যাগ ও রাজনীতি মুক্ত একটি শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলাম।’ 

মিথিলা নামে অপর শিক্ষার্থী বলেন, ‘উনি একজন নারী হয়েও বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় হেনস্থা করেছেন। তিনি আমাদের পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিয়ে করে সংসার করার কথা বলতেন। একজন শিক্ষক যেখানে পড়ালেখার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন সেখানে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত।’ 

শহীদুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘মেয়ের পড়ালেখার কারণে যখনই এই শিক্ষকের কাছে এসেছি তখন তার দাম্ভিকতা ও স্বেচ্ছাচারিতায় আহত হয়েছি। তিনি কাউকেই সম্মান দিতেন না। তার পদত্যাগের খবরে খুশি হয়েছি। একজন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বৃদ্ধির জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

পদত্যাগের পর প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার বলেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। বাধ্য হয়ে রাজনীতি করতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য নয়। আমাকে আরেকবার সুযোগ দেওয়া হলে আমি দলমতের উর্ধ্বে থেকে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করবো। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিনিয়র শিক্ষক অর্চনা রানীর কাছে আমার দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি।’ 

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্চনা রানী চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি কোনভাবেই এ পদের যোগ্য নয়। এভাবে দায়িত্ব পাওয়া সুখকর বিষয়ও নয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা জোর করে আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমি সবার সহযোগিতা চাই।’ 

ফেনী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.শফী উল্লাহ বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ এ বিষয়ে অবগত করেনি। খুব দ্রুত আমরা বিদ্যালয় পরিদর্শনে প্রতিনিধি পাঠাবো। তাদের প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা সেটিই বাস্তবায়ন করবো।’ 

সাহাব/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়