ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সিজিএসের সংলাপ

‘কোনো অঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠন সম্ভব নয়’

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২০, ১১ জানুয়ারি ২০২৫  
‘কোনো অঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠন সম্ভব নয়’

দেশ ও গণতন্ত্র পুনর্গঠনে সরকার ব্যবস্থাপনায় সকল বিভাগ থেকে প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেছেন, দেশের কোনো একটি অঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব নয়। এ জন্য সাম্যতা দরকার।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত সংলাপে বিশিষ্টজনেরা এমন কথা বলেন। রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করা হয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কারের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে দেশের প্রতিটি বিভাগে ধারাবাহিক সংলাপ করছে সিজিএস।

আরো পড়ুন:

সংলাপে অতিথি আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘‘ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো একজন ব্যক্তি আমাদের দেশের নেতৃত্বে এসেছেন, এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। আমাদের উচিৎ এ সময়কে কাজে লাগানো। দেশ সংস্কারের বিভিন্ন ধাপগুলো পুরণ করে আমাদের জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে ধৈর্য্য সহকারে বর্তমান সরকারকে সময় দেওয়া উচিৎ।’’

আরেক অতিথি আলোচক সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি আহমদ সফি উদ্দিন বলেন, ‘‘নাগরিক সমস্যা সমাধানে সকল পর্যায়ের মানুষকে নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। দেশের সিনিয়র সিটিজেনদের প্রাপ্য অধিকার দেওয়া, শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন করা, আইনের যথার্থ ব্যবহার, সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিল, প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আয়কর নিশ্চিত করা, শিক্ষায় উন্নয়ন বাস্তবায়নের মতো সংস্কারগুলো আবশ্যক।’’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু সংলাপে বলেন, ‘‘দেশ পুনর্গঠনের বিএনপির ৩১ দফা রয়েছে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসলে বিএনপি এই দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নতুন এক বাংলাদেশ উপহার দেবে। হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছি, এ দেশে আর ফ্যাসিজম কায়েম করতে দেওয়া হবে না।’’

রাজশাহী জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আবু মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘যেকোনো ধরনের সংস্কারের আলোচনায় সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আন্তরিক সম্পর্ক থাকা উচিৎ। এতে দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ত্বরান্বিত করবে।’’

সাংবাদিক আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে সাংবাদিকরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে যে রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও সাংবাদিকতার স্বার্থে সবাই যেন এক থাকে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত করা হয়।’’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তাসিন খান বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার শুধু বৈষম্যবিরোধীদের নয়, এটি বর্তমান বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলেরও। তাদের উচিৎ এ সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশ সংস্কার এগিয়ে নিয়ে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া।’’

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘৫ আগস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবর্তনের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এক ফ্যাসিস্টকে বিদায় করে আমরা যেন আরেকজন ফ্যাসিস্ট তৈরি না করি।’’

অনুষ্ঠানে রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও মতামত তুলে ধরেন। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, শিল্প উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, অধিকারকর্মী, নারী সংগঠক, সেচ্ছাসেবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংস্কার বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়