মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: সায়মার শোকে কাতর পুরো গ্রাম
গাজীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সায়মার বাড়িতে শোকের মাতম, ইনসেটে সায়মা
রাজধানী উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা আক্তারের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে চলছে শোকের মাতম।
নিহত শিশু শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার (৯) গাজীপুরের সিটি কর্পোরেশনের বিপ্লবর্তা গ্রামের শাহ আলম ও রিনা বেগম দম্পত্তির মেয়ে। তার বড়ভাই সাব্বির হোসেন এবার মাইলস্টোন স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছে।
নিহত সায়মার মরদেহ রাত দেড়টার দিকে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। এরপরই পুরো গ্রামের মানুষ চলে আসে তাদের বাড়িতে। গ্রামের প্রতিটি ঘরেই যেন নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিশুটির এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিহত সায়মার কবর খোঁড়া হয়েছে বাড়ির আঙিনাতেই। সকাল ১১টায় জানাজা নামাজ শেষে মরদেহ রাখা হয়েছে বাড়ির উঠানে। বড় ভাই সাব্বিরের বোন হারানোর আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। বাবা দূরে কবরস্থানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। শোকে কাতর মায়ের পাশে গ্রামের নারীরা বসে রয়েছেন। সবার চোখের চোখের পানিতে পরিবেশটা ভারি হয়ে উঠেছে।
নিহত সায়মার মরদেহের সামনে বসে বড় ভাই সাব্বির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, “বোন তুমি আমাকে রেখে চলে গেলে। আমরা দু'জন একসঙ্গে স্কুলে যেতাম। কত কথা বলতাম, আজ তুমি চুপ কেনো বোন!”
নিহতের বাবা শাহ আলম বলেন, “আমার বন্ধু ফোন করে জানায় স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপর আমরা সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও সায়মাকে পাইনি। রাত ৮টার পর জানতে পারি সিএমএসে মরদেহ রয়েছে। পরে আমারা তার মরদেহ নিয়ে আসি। গতরাতেও মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিল। কতবার চুমো দিয়েছে রাতে তার হিসাব নেই। এরপর আর মায়ের সঙ্গে কথা হয়নি। আমার মা আর আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবে না। এই কষ্ট কীভাবে সইব?”
মায়মার মা রিনা বেগম বলেন, “প্রতিদিন আমার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যেতাম। গতকাল আমার এক ভাই স্কুলে নিয়ে যায়। পরে ফেসবুকে জানতে পারি স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে। আমার মা স্কুলে যাওয়ার আগে বলে গেলো, মা স্কুলে গেলাম টা টা। এরপর আর মার সঙ্গে কথা হয়নি।”
ঢাকা/রেজাউল/এস