ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুষ্টিয়ায় জাল সনদে শিক্ষকতা, নেওয়া হলো ব্যবস্থা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৭, ৬ অক্টোবর ২০২৫  
কুষ্টিয়ায় জাল সনদে শিক্ষকতা, নেওয়া হলো ব্যবস্থা

আফরোজা আক্তার ডিউ

জাল সনদে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আফরোজা আক্তার ডিউকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদ্যালয়টির গভর্নিং বডির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন তাকে বহিষ্কার করেন।

রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কার্যনির্বাহী সভায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

আরো পড়ুন:

অভিযুক্ত আফরোজা কার্যক্রম নিষিদ্ধ কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের স্ত্রী। তিনি ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিয়োগ পেতে তিনি দারুল ইহসান নামে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য থেকে পাস করা অনার্স ও মাস্টার্সের সনদ দাখিল করেন। দীর্ঘদিন ধরে জাল সনদে চাকরিরত থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আফরোজা আত্মগোপনে চলে যান। জাল সনদে চাকরি নেওয়া ছাড়াও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে সরকারি অর্থ লোপাট ও তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনায় কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ফিলিপনগর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সবুর। এরই প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজা অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেন। 

কমিটি আফরোজার নিয়োগকালে স্কুলে জমা দেওয়া সব একাডেমিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাইকালে বেসরকারি দারুল ইহসান (ইউজিসি কর্তৃক কালো তালিকাভুক্ত ও হাইকোর্ট থেকে অবৈধ ঘোষিত) প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রির কাগজ খুঁজে পান। দারুল ইহসান নামে ওই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স সার্টিফিকেটের সিরিয়াল নম্বর-০৪৬৩৭ এবং মাস্টার্সের সার্টিফিকেটের সিরিয়াল নম্বর-০০৩৯৮১। যাচাইকালে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে দুইটি সার্টিফিকেটই ভুয়া বা জাল। 

ইউজিসির দেওয়া তথ্যে ভুয়া বা জাল সার্টিফিকেটে চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কার্যনির্বাহী সভা হয়। সেখানে আফরোজাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বেতন, ভাতাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা নেওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত পেতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং কমিটির সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, শিক্ষক আফরোজা আক্তার ডিউ ভুয়া সনদে চাকরিরত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির কার্যনির্বাহী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

তিনি জানান, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে এই শিক্ষক যে বেতন, ভাতাসহ সুবিধা নিয়েছেন তা ফেরত দিতে তাকে নোটিশ করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার বিরুদ্ধে।

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়