ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ||  কার্তিক ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সুপ্রিম কোর্টের রায় অবমাননা করে একই জমি দুই পক্ষের নামে নামজারি

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১১, ১৪ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৫:৩০, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
সুপ্রিম কোর্টের রায় অবমাননা করে একই জমি দুই পক্ষের নামে নামজারি

প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা।

সুপ্রিম কোর্টের রায় অবমাননা করে জামালপুরের মাদারগঞ্জে একই জমি দুই পক্ষের নামে নামজারির ঘটনা ঘটেছে। আর এর প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের হামলার হুমকি দিয়েছে একটি পক্ষ। এসবের প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বালিজুড়ী বাজার এলাকায় ভুক্তভোগীর ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুমন আহাম্মেদ নামে একজন ভুক্তভোগী। এসময় তিনি বলেন, “১৯৬০ সাল থেকে বালিজুড়ী এলাকার ৩৮ শতাংশ জমিতে বসবাস করে আসছে তার পূর্বপুরুষ। সেই জমি ১৯৮৬ সালে মো. ইস্রাফিল শেখের নামে ভূমিহীন হিসেবে রেজিস্ট্রি কবুলিয়ত করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু সেই জমি নিজেদের বলে দাবি করে ২০০৭ সালে মামলা করে একটি পক্ষ। সেই মামলায় ইস্রাফিল শেখের ওয়ারিশদের পক্ষে রায় দেন নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত ও সুপ্রিম কোর্ট। 

‘সেই রায় অবমাননা করে একটি চক্রের সাহায্যে চলতি বছরের জুলাই মাসের ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে সাড়ে ২৮ শতাংশ জমি নামজারি করা হয় প্রতিপক্ষ চারজনের নামে। এতে একই জমি দুই পক্ষের নামে নামজারি করা হয়। সেই সময় মাদারগঞ্জে বালিজুড়ী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে সাদেকুর রহমান, সাব-রেজিস্ট্রার পদে মো. আবু কালাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েদা খানম লিজা দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে সাব রেজিস্ট্রার বাদে সকলে বদলি হয়েছেন অন্যত্র।”

সুমন অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সেই জমির ২২.৭৫ শতাংশ অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলেও অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে সেই চক্রটি। পুরো বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের কাছে ১১ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এসবের প্রতিবাদ করায় ৩০ সেপ্টেম্বর তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেন প্রতিপক্ষ। পরে মাদারগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।”

এসব বিষয়ে জানতে মাদারগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মো. আবু কালামকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, “আমরা একটি জিডি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

মাদারগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও বলেন, ‘‘নায়েব সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার পর নামজারি করা হয়। তবে অনলাইনের মাধ্যমে বন্ধের দিন বা কম সময়ের মধ্যে নামজারি করা যায়। এখন আদালতের রায় থাকার পরেও নামজারির বিষয়টি আমার জানা নেই। কারণ তখন আমি ছিলাম। এখন ভুক্তভোগী পরিবার আমাকে বিষয়টি জানালে আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি অবগত নয়। আপনার কাছ থেকেই মাত্র জানতে পারলাম। আর এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”

জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে আসলে আমি পুরো বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

ঢাকা/শোভন/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়