দিনাজপুরে বৃষ্টিতে আমন ধানের ক্ষতি, দুশ্চিন্তায় কৃষক
দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বৃষ্টি ও বাতাসে নুয়ে পড়া দিনাজপুরের একটি ক্ষেতের ধান
দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমন চাষিদের মুখে এখন গভীর দুশ্চিন্তার ছাপ। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে মাঠে থাকা তাদের পাকা সোনালী ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। ঘাম ঝরানো ফসলের এ অবস্থা দেখে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
কৃষকরা জানান, এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছিল। হঠাৎ বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে সেই ফসল এখন নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বিশেষ করে নিচু জমির ধান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি দ্রুত রোদ না ওঠে, তাহলে কেটে রাখা সামান্য পরিমাণ ধান শুকানো সম্ভব হবে না। ভেজা অবস্থায় ঘরে তুলতে গেলে ধান পচে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।
জেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে হাকিমপুর উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ধান কাটার কাজ শুরু হতেই এমন আবহাওয়া। বাতাসে ধান পড়ে গেছে মাটিতে, জমিতে পানি জমেছে। ফলে ধান কেটে ঘরে তোলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। রোদ নেই, যে কারণে যতটুকু ধান কাটতে পেরেছি তা শুকানো সম্ভব হচ্চে না।”
বিরামপুর উপজেলার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, “যদি দ্রুত রোদ না ওঠে, তাহলে কাটা ধান শুকানো সম্ভব হবে না। ভেজা অবস্থায় ধান ঘরে তুলতে গেলে পচে যাবে। সবদিক দিয়েই ক্ষতি হচ্ছে।”
নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “মৌসুমের ধান বিক্রি করেই আমরা পরিবারের খরচ চালাই, ঋণ পরিশোধ করি। এবারের আবহাওয়ায় সব আশা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।”
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, “গত কয়েকদিন বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার কিছু এলাকায় আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করছেন। তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন যাতে কৃষকরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ