ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পেঁয়াজের দামবৃদ্ধিতে কার পকেট ভারী?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ৬ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৩:৩০, ৬ নভেম্বর ২০২৫
পেঁয়াজের দামবৃদ্ধিতে কার পকেট ভারী?

ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দুই মাস ধরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে শুধু দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের পরপরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে পেঁয়াজের দাম একলাফে ৩০-৩৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা এই আকস্মিক দামবৃদ্ধিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

ক্রেতাদের অভিযোগ, পেঁয়াজ চাষ করে কৃষক ন্যায্য দাম পান না, অথচ মধ্যস্বত্বভোগীরা এই সুযোগে রমরমা মুনাফা লুটে নেয়। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় কার লাভ, কার ক্ষতি- রাইজিংবিডি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ী আব্দুল বাশির ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা পার্শ্ববর্তী জেলার হাটবাজার থেকে কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য দামে পেঁয়াজ কিনি। কৃষকের লাভ না হলেতো আমাদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করবে না। আমরাও সামান্য লাভে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। মোটাদাগে বলা যায়, কারোর ক্ষতি হচ্ছে না, সবাই লাভবান হচ্ছেন।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল হক দুলাল বলেন, “কৃষককে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ইয়ার ফ্লো মেশিন দেওয়া হয়েছে। যেসব কৃষক পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পেরেছেন, তারা এখন দাম পাচ্ছে। এভাবে দাম পেলে পেঁয়াজ আবাদ আরো বাড়বে।”

অন্যদিকে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মত ভিন্ন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের এক্সপার্ট কিউরেটর শহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় কৃষকের কাছে বর্তমানে তেমন পেঁয়াজ মজুদ নেই। স্থানীয় বাজারে যেসব দেশি পেঁয়াজ আসছে, তা মূলত পার্শ্ববর্তী জেলা- যেমন রাজশাহীর তাহেরপুর, বানেশ্বর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও পাবনা থেকে পাইকাররা সরবরাহ করছেন।

শহিদুল ইসলামের মতে, “এই প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজ বিক্রি করে সবচেয়ে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বাভোগীরা। কৃষকরা তেমন লাভ পাচ্ছেন না। নভেম্বর মাসজুড়ে পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে। তবে তিনি এটাও মনে করেন যে, এমন দাম পেলে কৃষকরা কিছু অংশে লাভবান হবেন এবং দেশি পেঁয়াজের আবাদে আরো উৎসাহিত হবেন।”

সব মিলিয়ে, পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন সরবরাহকারী মধ্যস্বত্বভোগী পাইকাররা। অন্যদিকে, যারা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখতে পেরেছেন, সেই কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। তবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা এবং সেই সব কৃষক, যারা সংরক্ষণের অভাবে মৌসুমের শুরুতে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিয়েছিলেন।

ঢাকা/শিয়াম/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়