ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ঝপঝপিয়া নদীতে ভাঙন, ৬ গ্রামের মানুষের আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ৬ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:২৭, ৬ নভেম্বর ২০২৫
ঝপঝপিয়া নদীতে ভাঙন, ৬ গ্রামের মানুষের আতঙ্ক

মৌখালী গ্রামে ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

জেলার দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ছয়টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। 

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহূর্তে নদী ভাঙ্গনে চালনাসহ পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগেই দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধ সংস্কারের স্থানীয় অধিবাসীরা পাউবো কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে গত দুইদিন ধরে গাজী বাড়ির সামনে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দেয়। সেখান থেকে এরইমধ্যে এক তৃতীয়াংশ বাঁধ ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। 

এ ভাঙনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের মৌখালী, পানখালী, লক্ষ্মীখোলা, খাটাইল, কাটাবুনিয়া ও হোগলাবুনিয়া গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। 

এছাড়াও উপজেলার ভদ্রা, আন্ধার মানিক, পশুর, ঢাকী ও শিবসা নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পাউবোর ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাটের পশ্চিম পাশে, খোনা, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝলবুনিয়া, মোজাম নগর, আন্ধার মানিক, চালনা পৌরসভার খলিশা নামক স্থানে নতুন করে নদী ভাঙন ও ফাঁটল শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো দ্রুত সংস্কার করা নাহলে যে কোন মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বলেন, “গত কয়েকদিন আগে মৌখালী গাজী বাড়ির সামনে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দিলে তখন এটা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করি। তিনিও তখন সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মুঠো ফোনের মাধ্যমে অবগত করেন। তবে পাউবো বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে গত দুইদিনে বেড়িবাঁধটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ কারণে মৌখালী গ্রামের শত শত পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।”

পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পাউবোর এ বাঁধটি খরস্রোতা ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এলাকায় এসে বাঁধটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশা করা হচ্ছে অতিদ্রুত পাউবো এ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি রক্ষায় কাজ শুরু করবেন।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মধুসুদন পাল বলেন, “ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেড়িবাঁধটি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া আশপাশের কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পাউবো’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।” 

এ বিষয়ে খুলনা পানি উন্নয়ন বিভাগ-২ (বাপাউবো)’র খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, “দাকোপের ঝপঝপিয়া নদীর প্রায় ৭০ মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মূল নদী থেকে প্রায় ১৫ মিটার দূরত্বে রয়েছে। ফলে বাঁধ ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হওয়ার আশংকা নেই। তবে, বাঁধের বাইরে একটি মসজিদ রয়েছে। সবকিছু মিলে আমরা একটি সার্ভে করছি। সার্ভে শেষ হলে বাঁধ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়