ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘ইউটিউব চালাব সবাইকে গল্প বলার জন্য’

গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৮, ৩০ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘ইউটিউব চালাব সবাইকে গল্প বলার জন্য’

মাহাথির মাহমুদ অন্তিক একজন কার্টুনিস্ট, টুডি অ্যানিমেটর এবং ইউটিউবার। সবার কাছে অন্তিক মাহমুদ নামেই পরিচিত। কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন কার্টুন পিপল, টেন মিনিট স্কুলসহ দেশের প্রথম সারির পত্রিকাগুলোতে। সব সময় মজার ছলে ভিন্নভাবে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেন অন্তিক মাহমুদ। তার সঙ্গে কথা বলেছেন গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত।

সীমান্ত: ক্রিয়েটিভিটি জাগিয়ে তোলার জন্য কার্টুনকে কেন বেছে নিলেন?
অন্তিক মাহমুদ: ছোটবেলা থেকেই কার্টুন বেশ ভালো লাগতো। আগে গল্প লিখতাম। গল্পে এক্সপ্রেশন আর পরিবেশ বোঝানোর জন্য আমার মতে কার্টুনের চেয়ে ভালো কোনো রাস্তা নেই। তাই কার্টুন আঁকা শুরু।

সীমান্ত: কার্টুন আঁকার হাতেখড়িটা হয় কীভাবে?
অন্তিক মাহমুদ: বাকি সবার মতো গ্রামের দৃশ্য আকতাম আর্ট টিচারের কাছে। অনেক টিচার পেয়েছি। কিন্তু সবাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গ্রাম, নদী, কলাগাছ আঁকাত। একদিন এক নতুন আর্টের টিচারের কাছে আমার বোন ভর্তি হয়। আমিও ওকে পিক করতে যাওয়ার সময় ক্লাসে বসে থাকতাম, আর যেহেতু ধরাবাধা নেই; যা মন চায় আঁকতাম। স্যার সেটা দেখে উৎসাহ দিলেন। এই যে কার্টুনের শুরু। তবে আমাকে কেউ শেখায়নি। নিজেই শিখেছি। মানুষকে দেখিয়েছি। মানুষ প্রশংসা করেছে, আমি চালিয়ে গিয়েছি।

সীমান্ত: কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন প্রথম আলোসহ অনেক জায়গায়, সে গল্প শুনতে চাই।
অন্তিক মাহমুদ: একেবারে সংক্ষেপে বলি। আমি প্রথম দিকে অয়েব কমিক্স করতাম। কিছুই না, শুধু কমিক্সের ছবি মোবাইলে তুলে ফেসবুকের বিভিন্ন আর্ট গ্রুপে আপলোড দিতাম। সেখান থেকেই প্রথম আলো আমার খোঁজ পায়। যোগাযোগ করে। আমিও ভর্তি পরীক্ষার মাঝে ইন্টারভিউ দিয়ে আসি। কাজ পেয়ে যাই। আব্বু তখন অনেক খুশি হয়েছিলো আমার আঁকাআঁকির জন্য প্রথম বারের মতো। এর পর বাকিটা নেটওয়ার্কিং সত্যি বলতে।

সীমান্ত: আপনার শিক্ষাজীবনের গল্প শুনতে চাই।
অন্তিক মাহমুদ: আমার ইউটিউব চ্যানেল তাহলে কী করতে আছে? হা হা হা।

সীমান্ত: ইউটিউব, টুডি অ্যানিমেশন কার্টুন বানানোর চ্যানেল তৈরি করার পরিকল্পনা এলো কীভাবে?
অন্তিক মাহমুদ: আমি আসলে থ্রিডি অ্যানিমেশন কোর্স করেছিলাম। ভিএফএক্স, সিজিআই এর প্রতি আমার প্রচুর আকর্ষণ ছিল। কিন্তু পরে দেখি আমাকে দিয়ে এটা হবে না। আমি খুব কুইক কাজ জমা দেওয়ার পাবলিক। কিন্তু থ্রিডি কাজ অনেক ধৈর্যের ব্যাপার (টুডিও। কিন্তু সেটা পরে বুঝেছি)। তাই একদিন আমার ফ্রেন্ডের জন্মদিনের জন্য একটা টুডি (তখন কাজ খুব কম পারি, কিন্তু পারি) অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়ে দেই। সবাই সেটা পছন্দ করে। পরে সেটাই চালিয়ে যাই। আস্তে আস্তে হাত আসে কাজে। বাইরের অপরিচিত মানুষও দেখা শুরু করে।

সীমান্ত: টুডি অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ শুরু করলে তরুণরা কোথায় থেকে শুরু করতে পারে?
অন্তিক মাহমুদ: আমি বলবো আগে আঁকাআঁকিটা মোটামুটি রপ্ত করেন। নিজের একটা স্টাইল আনেন। ক্লিন করেন কাজগুলো। এরপর বাকিটা হয়ে যাবে। টুডি অ্যানিমেশন শিখতে বেশি কষ্ট নেই।

সীমান্ত: টেন মিনিট স্কুলে কাজ করার শুরুটা কীভাবে এবং কী হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন সেখানে?
অন্তিক মাহমুদ: ইউটিউবে ভিডিও দেওয়া যখন শুরু করি, তখন আমার এক ফ্রেন্ড একটা ভিডিও শেয়ার করে। ফ্রেন্ড কাজ করত টেন মিনিট স্কুলে। তাই আয়মান ভাই আর সাদমান ভাইয়ের চোখেও কন্টেন্টটা আসে। ব্যাস। এরপর টেন মিনিট স্কুলেও কাজ করার সৌভাগ্য হয় আমার।

সীমান্ত: প্রতিটি অ্যানিমেশন কার্টুন বানানোর পেছনে কি কোনো বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন?
অন্তিক মাহমুদ: অবশ্যই। আগে অতটাও ফোকাস ছিলাম না। কিন্তু এখন সবসময় চেষ্টা করি হালকা ম্যাসেজ দিতে। কিন্তু এন্টারটেইনমেন্টের অংশটাও কমিয়ে দেওয়া যাবে না তাই বলে। এখন তাই একটা ব্যালেন্সে আছে সবকিছু।

সীমান্ত: বইমেলায় নোমান-১ আসলে বলেছেন এটার ধারাবাহিকভাবে আসবে। এ সম্পর্কে যদি বলেন।  
অন্তিক মাহমুদ: অন্তিক যেমন একটা অ্যানিমেশন ক্যারেক্টার, তেমনি আরেকটা কমিক বুক ক্যারেক্টার বানাতে চেয়েছি আমি। একটা চরিত্র তৈরি করতে হলে তাকে নিয়ে কন্টেন্টও থাকা লাগবে। তাই আমি এই কমিক বুক ধারাবাহিক করার সিদ্ধান্ত নেই।

সীমান্ত: ‘চল’ লিখে ভালো সাড়া পেয়েছেন, নতুন কোনো বই নিয়ে কাজ করছেন কি এখন?
অন্তিক মাহমুদ: হ্যাঁ, কিন্তু বলা যাবে না। তবে আগের বারের মতো অপশন সিলেক্টের উপর গল্প আগাবে।

সীমান্ত: অন্তিক মাহমুদের বন্দিজীবন কেমন কাটছে?
অন্তিক মাহমুদ: কবে না জানি পালিয়ে যাই। হা হা হা।

সীমান্ত: সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অন্তিক মাহমুদ: আপনাকে ও রাইজিংবিডিকেউ ধন্যবাদ, সবাই ঘরে থাকুন, সচেতন থাকুন।



ঢাকা/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়