ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

তিতুমীর কলেজের

শিক্ষার্থীদের অবসর সময় কাটে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে

সিয়াম মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১৯ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৪:০১, ২৩ মার্চ ২০২৪
শিক্ষার্থীদের অবসর সময় কাটে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে

ছাদে পলেস্তারা নেই। বেরিয়ে গেছে ভেতরের রড। এমন ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা হতো। একদিন পরীক্ষা চলাকালে হঠাৎ করেই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। কিছু ছোট টুকরা ছুটে এসে আফিফ নামে এক শিক্ষার্থীর মাথায় পড়ে।  

ঘটনাটি রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের দ্বিতীয় তলায় ১৩০২ নাম্বার কক্ষের। সেই যাত্রায় আফিফের বৃহৎ ক্ষতি না হলেও বেশ আতঙ্কিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর পেরিয়ে যায় বছর খানেক। কিন্তু সেই কক্ষটির পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়নি এখনো। নিরাপত্তার কথা ভেবে বর্তমানে কক্ষটিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তবে রীতিমতো খোলা থাকে সবসময়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৩০২ নাম্বারের ঝুঁকিপূর্ণ এই কক্ষে নেই কোনো সতর্কতামূলক নোটিশ। সেখানে দেদারছে আড্ডা দেওয়া, বই পড়াসহ নানাভাবে অবসর সময় কাটাচ্ছেন বেশকিছু শিক্ষার্থী। 

আড্ডারত কয়েকজন শিক্ষার্থী সঙ্গে কথা হলে তারা রাইজিংবিডিকে বলেন, 'আমাদের তো ক্লাস শেষ। তাই এই রুমে বসে সময় কাটাচ্ছি। এই রুমে ক্লাস নেওয়া হয় না। তাই, বন্ধুরা এসে বসলাম আরকি। কক্ষটি যে ঝুঁকিপূর্ণ, তা জানা ছিল না। প্রায়ই তো আমরা এখানে আড্ডা দিয়ে থাকি। আমরা ছাড়াও অনেকেই তো এ রুমে এসে বই পড়ে, গল্প করে। দরজা তালাবদ্ধ নেই। অন্তত রুমের বাইরে এ ব্যাপারে কোনো নোটিশ থাকলে বোঝা যেত, আমরা ঢুকতাম না। বিষয়টি এখন থেকে মাথায় থাকলো।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, 'যখন ক্লাস হয় না, তখন অবসর সময় কাটাতে কিছু শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বসে থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে চাইলে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দরজায় তালা লাগিয়ে রাখাই ভালো।'

এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাবিনা ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, 'আমরা মেরামতের জন্য দরখাস্ত করেছি। অধ্যক্ষ বলেছেন, মেরামতের ব্যবস্থা করবেন। যেহেতু অধ্যক্ষ বলেছেন, তাই এ বিষয়ে তো আর কথা হতে পারে না।’
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কক্ষটি খোলা থাকে কেনো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’

জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের কাজ চলছে। ওই কক্ষটি আপাতত বন্ধ আছে। ওখানে ক্লাস নেওয়া হয় না।’

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া স্বত্ত্বেও কক্ষটি খোলা থাকা এবং শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রাপ্তবয়স্ক। ওরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। ওদেরতো হাতে-পায়ে বেঁধে রাখতে পারবো না। ওদের বলা হয়েছে, নোটিশ করা হয়েছে। তারপরেও তারা সেখানে যদি যায়, কি আর করার আছে!’

উল্লেখ্য, গত ১৯৯৫ সালে মাস্টার্স প্রিলিমিনারি কোর্সের মাধ্যমে যাত্রা শুরু সরকারি তিতুমীর কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের। বর্তমানে বিভাগটি পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত হলেও ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে দুটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে । বর্তমানে এই বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন এবং শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১২০০।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়