ঢাকা     বুধবার   ১৪ মে ২০২৫ ||  চৈত্র ৩১ ১৪৩২

রাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৮ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ০০:১৪, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
রাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’

স্ক্যাবিসে আক্রান্ত রোগীরা রাবির মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা নিতে অপেক্ষা করছেন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হল ও মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চর্মরোগ ‘স্ক্যাবিস’। ছোঁয়াচে রোগটিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়াকে আশঙ্কাজনক বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন।

রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে এ চিকিৎসক সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায়। কেউ সিরিয়ালে ডাক্তার দেখানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছেন, কেউবা ওষুধ নিতে অপেক্ষা করছেন।

আরো পড়ুন:

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “কয়েকদিন ধরেই শরীরে ব্যাপক চুলকাচ্ছে, লাল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের রুমমেটদেরও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে।”

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমার হাতের আঙুলে, পেটে এবং শরীরের কিছু স্পর্শকাতর জায়গায় চুলকাতে চুলকাতে ফুলে গেছে। এখন ডাক্তার দেখালাম। অনেক দিন পর ভালো চিকিৎসাসেবা পেলাম। একটি ছাড়া সব ওষুধই পেয়েছি।”

স্ক্যাবিসে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন রাবির মেডিকেল সেন্টারের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন

এ বিষয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন বলেন, “শত শত চর্মরোগের মধ্যে সবচেয়ে ছোঁয়াচে রোগটির নাম স্ক্যাবিস। গত কয়েকদিন ধরে ৩০-৪০ জন করে এই রোগে আক্রান্ত রোগী আসছেন। বিভিন্ন হল, মেসের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে রোগটি।”

রোগটির বর্ণনা দিতে গিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, “আঙুলের ফাঁকে, কব্জির সামনে, বগলে, নাভিতে ছোট ছোট ফুসকুঁড়ি নিয়ে শুরু হয় স্ক্যাবিস। বিশেষ করে রাতে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়। ক্লোজ কন্টাক্টে যারা থাকেন, তাদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে যাওয়ার মাত্রা অনেক বেশি।”

মেডিকেল সেন্টারে রোগটির ওষুধ থাকার বিষয়ে ডা. মাশিহুল আলম বলেন, “অবাক করা বিষয় হলো, মেডিকেল সেন্টারে স্ক্যাবিস রোগের ওষুধ ছিল না। পরে প্রধান চিকিৎসক ডা. মাফরুহা সিদ্দিকা লীপিকে বিষয়টি জানালে তিনি জরুরিভিত্তিতে ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। এখন থেকে রাবি চিকিৎসা কেন্দ্রেই স্ক্যাবিসের চিকিৎসাসহ সব ওষুধ পাবেন শিক্ষার্থীরা।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “হলে বা মেসে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে এ ছোঁয়াচে রোগ বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের উচিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সচেতন থাকা। এছাড়া একে অন্যের পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার না করা।”

শিক্ষার্থীরা ঠিকঠাক সেবা পাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সবাইকে সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধ সরবরাহ করতে। যদিও আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে, আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি; কিছু ওষুধ পেয়েছি, আরো দরকার।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়