ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রেললাইন অবরোধ করে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাকৃবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ৬ মে ২০২৫  
রেললাইন অবরোধ করে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রেললাইন অবরোধ করেছেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা 

বিএসসি ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের পেশাগত মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির সামনে থেকে কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।

আরো পড়ুন:

পরে মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে গিয়ে রেললাইন অবরোধ করে অবস্থান নেন তারা। প্রায় দেড়ঘন্টা পর রেললাইন ছেড়ে দিলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং এসব দাবি না মানা হলে সারা বাংলায় কৃষিবিদ ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। 

বিক্ষোভ সমাবেশে কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. বেলাল হোসেন বলেন, “ডিপ্লোমাধারীরা যদি একটি শরীরের হাত হয়, তাহলে কৃষিবিদরা সেই শরীরের মস্তিষ্ক। কৃষিবিদরা না থাকলে দেশের কৃষি সেক্টর ডিপ্লোমাধারীদের প্যারালাইজড হয়ে যাবে। কৃষিবিদদের যথার্থ মর্যাদা ছাড়া কৃষি সেক্টরকে কখনোই সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। তাই ইন্টেরিম সরকারকে বলব কৃষিবিদদের নিয়ে ভাবুন।”

একই অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইরফান ইউসুফ শিহাব বলেন, “মামার বাড়ির আবদারের মতো শুধু চাকরি চাইলেই হবে না, কাজ করে মেধা দিয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনারা যেদিন যথাযথ শিক্ষা, যোগ্যতা, দক্ষতা নিয়ে আমাদের সমমানের হয়ে নবম গ্রেড নিতে আসবেন, সেদিনই আমরা আমাদের চাকরি ক্ষেত্রে জায়গা দিব। কৃষিবিদ আমাদের ট্যাগ, ঐক্য, নিষ্ঠা, মেধা, মনন। এর দিকে আপনারা আঙ্গুল তুললে পুরো বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের অবস্থান বুঝিয়ে দেবে।”

চতুর্থ বর্ষের সম্রাট আল হাসান বলেন, “সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে তারা নিয়োগ চান। এখানে পদের মধ্যেই বিজ্ঞান কথাটা আছে। আমরা সবাই জানি, ডিপ্লোমা পড়ার জন্য বিজ্ঞান বিভাগে পড়া আবশ্যক নয়। তাহলে তাদের এ দাবি কতটুকু যৌক্তিক?”

অবরোধ শেষে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার কাছে ছয় দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি গ্রহণ করে উপাচার্য বিএসসি কৃষিবিদদের পেশাগত অধিকার রক্ষা ও বৈষম্য নিরসনে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। 

উপাচার্য বলেন, “ডিপ্লোমাধারীদের দাবির বিপরীতে শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। এসব দাবি যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব। কৃষিবিদদের অস্তিত্ব রক্ষায় যেকোনো যৌক্তিক দাবিতে আমি পাশে আছি।”

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দশম গ্রেডের পদ (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/ উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) বিএসসি কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে; ডিএইসহ অন্যান্য কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে নবম ও অন্যান্য গ্রেডে পদোন্নতি এবং কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস করতে হবে; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে নবম গ্রেডে (বিএডিসি কোটাভিত্তিক) পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না।

অন্য দাবিগুলো হলো- দশম গ্রেডের পদগুলো গেজেটের আওতার বাইরে রেখে পৃথক পদসোপান বা প্রচলিত কাঠামো বজায় রাখতে হবে; কৃষিবিষয়ক ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না—এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; কৃষি বা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ব্যতীত কেউ ‘কৃষিবিদ’ পদবী ব্যবহার করতে পারবে না, এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অধীনেই রাখতে হবে।


 

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়