চিন্তাবিদ ফ্রানৎস ফানোঁর সম্মানে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার
ক্যাম্পাস প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
চিন্তাবিদ ফ্রানৎস ফানোঁর সম্মানে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার
দার্শনিক, বিপ্লবী চিন্তাবিদ ও তাত্ত্বিক ফ্রানৎস ফানোঁর সম্মানে গ্রিন ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগ আয়োজন করেছে ছয় দিনব্যাপী সেমিনার। ‘Fanon at 100 সিরিজ’ নামে এই সেমিনার শুরু হয়েছে ১৩ জুলাই। চলবে ২১ জুলাই পর্যন্ত।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নিজস্ব ক্যাম্পাসে প্রথম দিনে সেমিনারের বিষয় ছিল “Successful Completion of Seminar 1: ‘Black Skin, White Masks’- কালা চামড়া, ধলা মুখোশ-ঔপনিবেশিক দাসত্বের মনস্তত্ত্বের ব্যবচ্ছেদ।” এ বিষয়ে বক্তা ছিলেন অনুবাদক ও চিন্তক জাভেদ হুসেন।
ছয় পর্বের সেমিনারের শেষ দিনের (২১ জুলাই) বিষয় ‘শতবর্ষে ফ্রানৎস ফানোঁ: পরাধীন মুখ, স্বাধীন মুখোশ’। এ বিষয়ে বক্তব্য দিবেন এবং আলোচনা করবেন লেখক, চিন্তক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।
আয়োজকরা জানান, বিপ্লবী চিন্তাবিদ ফ্রানৎস ফানোঁকে সম্মান জানাতে এবং বিশিষ্ট বক্তাদের নিয়ে ছয়টি অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ সেমিনারের মাধ্যমে তার উত্তরাধিকার অন্বেষণ করতেই এই সেমিনারের আয়োজক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফ্রানৎস ফানোঁ ছিলেন একজন মনোচিকিৎসক, রাজনৈতিক দার্শনিক এবং লেখক। তিনি মার্টিনিক দ্বীপের একজন ফরাসি ঔপনিবেশিক ছিলেন এবং তার কাজ উত্তর-ঔপনিবেশিকতা, সমালোচনা তত্ত্ব, এবং মার্কসবাদের মতো ক্ষেত্রগুলিতে প্রভাবশালী।
ফ্রানৎস ফানোঁ ১৯২৫ সালের ২০ জুলাই ফ্রান্স অধ্যুষিত মার্টিনিক উপনিবেশে জন্মগ্রহণ করেন। মার্টিনিক সমাজে তাঁর পরিবার সামাজিক অবস্থানের দিক থেকে কৃষ্ণাঙ্গ মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ফানোঁর পিতা ক্যাসিমির ফানোঁ পেশায় আমদানি-রপ্তানি বিভাগে পর্যবেক্ষণের কাজ করতেন। মার্টিনিকের রাজধানী পোর্ট-দ্য-ফ্রান্সের শহরতলিতে মা এলেয়ানোর মেডেলিচের যন্ত্রপাতির একটি দোকান ছিল। সাধারণত এ ধরনের পরিবারের লোকজন ফ্রান্সের শ্বেতাঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে নিজেদের পরিচয় নির্মাণের চেষ্টা করে থাকেন। ফানোঁ এই পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠেন। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালীন আইমা চেসেয়ারের বিবৃত ‘কৃষ্ণাঙ্গদের গৌরবদীপ্ত সাংস্কৃতিক আত্মোপলব্ধি বা নেগ্রিটিউড’-এর প্রাথমিক পাঠ তাঁর জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। এই পাঠের পর বিশেষত ফ্রান্সের ইতিহাসচর্চাকালে তিনি নড়েচড়ে বসেন। এইবার স্বদেশের ইতিহাস নিজের মতো করে শিখতে থাকেন। ইউরোপীয় মাতব্বরি মানসিকতার যারা সমালোচনা করেন, তাদের মধ্যে মার্টিনিক অধিবাসী আইমা চেসেয়ার একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
রাজনীতির শিকার হয়ে ফানোঁ নিজেকে মার্টিনিক সম্প্রদায়ের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করবেন এবং পূর্বপরিকল্পিত বর্ণবাদী পরিচয় নির্মাণকে সমর্থন করবেন কিনা—এই দুই সমস্যা নিয়ে তিনি দ্বিধান্বিত হন। অবশেষে ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উত্তাল সময়ে ফ্রান্স থেকে মুক্তিকামী মজলুমদের সঙ্গে জালিমদের দখলকৃত নিজ দেশ ছেড়ে চলে যান।
ঢাকা/এস/এসবি