ওসমান হাদিকে গুলির প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ
রাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সমন্বয়ক, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য এমপি পদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারিতে শেষ হয়।
এ সময় তাদের ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ', ‘জুলাইয়ের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই', ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ', সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও', জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেক বার', ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না' ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ সময় রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “জুলাই এর পর থেকে দুইটা গোষ্ঠী এখনো পর্যন্ত একে অন্যকে সমান তালে সাপোর্ট করে যাচ্ছে। একটা হচ্ছে খুনি লীগ, আরেকটা হচ্ছে যারা আওয়ামী লীগকে বিভিন্ন নামকরণে বৈধতা দিতে চায়। গতকাল যখন ডাকসু নেতা এবি জুবায়ের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর এক শিক্ষককে ধাওয়া করেছিল, তখন কিছু সুশীলের চেতনাদণ্ড দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। আজকে সেই সুশীল বাঙ্গু সমাজকে সরব দেখতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ মানে আওয়ামী লীগ, মুজিব মানে মুজিব, হাসিনা মানে হাসিনা; এদের ভিন্ন পজিটিভ সংজ্ঞায়ন এ বাংলার মাটিতে হতে পারে না। এ নির্বাচনে কেমন লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে, এইটা আমাদের বোঝা হয়ে গেছে। তফসিল ঘোষণার এক দিনের মাথায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা করা হয়েছে। তার মানে আগামী নির্বাচন কত বড় ভয়ঙ্কর মেসেজ দিচ্ছে বিপ্লবীদের জন্য। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত, অনতিবিলম্বে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা ইন্টেরিমের পক্ষ থেকে দেখতে চাই।”
এ সময় রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা নেতৃত্ব ওসমান হাদি। অনেক জুলাই যোদ্ধা অনেক গোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেছে, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে; কিন্তু, ওসমান হাদি কারো সাথে আপস করে নাই। ওসমান হাদি ভারতীয় আধিপত্যবাদ, মুজিববাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার থেকেছেন। তাই, আমরা মনে করি, আজকে যে হামলা হয়েছে, এর সাথে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও মুজিববাদী লোকেরা জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে ওসমান হাদি চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। আমরা মনে করি, এ হামলার পেছনে এইসব টেন্ডারবাজেরও হাত আছে। আমরা অতিদ্রুত জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
আমাদের মাথায় যতই গুলি করা হোক না কেন, আমরা ইনসাফ নিয়ে বেঁচে থাকব বলে মন্তব্য করেছেন রাকসু ভিপি ও রাবি শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তিনি আরো বলেন, “তারা আমাদের শহিদ করে, গুলি করে কখনো থামাতে পারে নাই আর কখনো পারবেও না, ইনশাআল্লাহ। আজকের এই বাংলাদেশ ইনসাফের বাংলাদেশ, আজকের এই বাংলাদেশ জুলাইয়ের বাংলাদেশ। যারা আওয়ামী প্রেতাত্মাদের সফট কর্নার দিতে চান, তারা জেনে নিন— আমরা মুসলিম, আমরা সংগ্রামী, আমরা কখনো থেমে যাব না।”
তালাইমারিতে জমায়েত হয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য মোনাজাত করেন উপস্থিত রাকসুর নেতাসহ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলে রাকসু ভিপি, রাকসু জিএস, রাকসুর অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, রাবি শিবিরের নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/জান্নাত