ঢাকা     শনিবার   ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আগামী বাজেটে ভর্তুকি কমানোর উদ্যোগ থাকবে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ২১ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ০৯:৩৪, ২১ এপ্রিল ২০২৪
আগামী বাজেটে ভর্তুকি কমানোর উদ্যোগ থাকবে

আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়িয়ে এ খাতে ভর্তুকি কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ পদ্ধতিতে ভর্তুকির পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার নিচে নামিয়ে আনা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে দেওয়া ভর্তুকির পরিমাণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটের এর পরিমাণ কমিয়ে ৯৮ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দেওয়া হবে বিদ্যুৎ খাতে। যার পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এরপর রয়েছে কৃষি খাত। এ খাতে ভর্তুকির প্রস্তাব করা হচ্ছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। রফতানি প্রণোদনায় দেওয়া হবে ৭ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। আমদানিকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) খাতে ভর্তুকি দিতে হবে ৭ হাজার কোটি টাকা। খাদ্য খাতে ভর্তুকি থাকবে সাত হাজার কোটি টাকা। এবং রেমিট্যান্স প্রণোদনায় ভর্তুকির প্রয়োজন হবে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, গেল মাসের শেষ সপ্তাহে বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির যে সভা হয়েছে তাতে ভর্তুকি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় ভর্তুকির অতিরিক্ত চাপের বিষয় নিয়ে অনেকটা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভর্তুকি কমানোর জন্য দ্রুত বিদ্যুৎ, সার ও পানির দাম বৃদ্ধির সুপারিশও করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভর্তুকির এত চাপ অর্থনীতি সহ্য করতে পারবে না। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিদ্যুৎ ও পানির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হলেও এ মুহূর্তে সারের দাম বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ও প্রণোদনা খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমিয়ে ভর্তুকির রাশ টেনে ধরা হবে। এজন্য বিদ্যুৎ ও এলএনজিসহ পেট্রোলিয়ামের দাম বৃদ্ধি করা হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুতের দাম ধাপে ধাপে বাড়ানোর কাজটি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ খাতে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের চাহিদার বিপরীতে আমরা ভর্তুকির অর্থ নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছি না। ইতোমধ্যে ভর্তুকির অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে ছয় মাস পিছিয়ে রয়েছি। তাই ‘ক্যারি অভার’ বা বকেয়া অর্থ পরিশোধের জন্য বিদ্যুতে এত টাকা ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরই ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। যেমন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ ছিল ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ছিল ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের (২০১৭-২০১৮) বাজেটে, ভর্তুকি, নগদ সহায়তা, প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৪৫ কোটি টাকা; যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ৩ ভাগ। তার আগের অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা ছিল ২৬ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ২ ভাগ। যদিও সংশোধিত বাজেটে এ ভর্তুকির পরিমাণ ২৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এর আগে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।

/হাসনাত/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়