ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনকে রাখতে হবে: ইউরোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ১০ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৩:২২, ১০ আগস্ট ২০২৫
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনকে রাখতে হবে: ইউরোপ

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আগামী ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমিরি জেলেনস্কি ইতিমধ্যেই সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে নেওয়া যেকোনো সমাধান হবে ‘শান্তির বিরুদ্ধে সমাধান’। সেই সুরেই সুর মিলিয়ে এবার ইউরোপীয় দেশগুলোও বলছে,  কিয়েভকে বাদ দিয়ে এই যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।

আরো পড়ুন:

রবিবার (১০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, “রাশিয়ার সঙ্গে কোনো শান্তি আলোচনা হলে সেখানে অবশ্যই কিয়েভকে রাখতে হবে। ইউক্রেনে শান্তি আনার পথ নিয়ে সিদ্ধান্ত ইউক্রেনকে ছাড়া হতে পারে না।”

ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনায় ডাকা নাও হতে পারে বলে অনেকের মধ্যেই উদ্বেগ রয়েছে। এ নিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, কিইভকে ছাড়া কোনো চুক্তি হলে তা হবে ‘নিস্ফলা সিদ্ধান্ত’।

শনিবার হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করার ইচ্ছা আছে ট্রাম্পের, কিন্তু আপাতত রুশ প্রেসিডেন্টের অনুরোধে কেবল রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের দুই নেতার মধ্যেই বৈঠক হচ্ছে।

ট্রাম্প এর আগে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক দিয়ে শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি ‘রাশিয়াকে দিয়েই শুরুর’ পরিকল্পনা করছেন, তবে পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের ‘সুযোগ আছে’ বলে তার বিশ্বাস।

তবে এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের ব্যাপারে পুতিন আদৌ রাজি হবেন কিনা, তা অনিশ্চিত। সাড়ে তিন বছর আগে তিনি প্রতিবেশী দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের দুই নেতা কখনো মুখোমুখি বসেননি। 

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির বিস্তারিত ঘোষণা করা হয়নি। তবে শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন যে, এতে ‘উভয়ের উন্নতির জন্য কিছু অঞ্চল বিনিময়’ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর ফলে ইউক্রেনকে তার ভূখণ্ডের উল্লেখযোগ্য অংশ আত্মসমর্পণ করতে হতে পারে, যার ফলাফল কেবল রাশিয়ার আগ্রাসনকে উৎসাহিত করবে বলে জেলেনস্কি এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা বলছেন।

একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, খেরসন ও ঝাপোরিঝিয়া ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে রাশিয়া পুরো দনবাস অঞ্চল ও ক্রাইমিয়া রাখতে পারবে এমন প্রস্তাবসহ একটি চুক্তিতে ইউরোপীয় নেতাদের রাজি করাতে হোয়াইট হাউজ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

২০১৪ সালেই রাশিয়া ক্রাইমিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এখন দনবাসের সিংহভাগও তাদের কব্জায়। খেরসন ও ঝাপোরিঝিয়ার কিছু এলাকা দখলে থাকলেও ওই দুই অঞ্চলের বেশ খানিকটা এখনও কিইভ বাহিনীর হাতে রয়েছে।

এদিকে ইউক্রেন ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ যুদ্ধ বন্ধে তাদের ‘ছক’ ট্রাম্প ও তার শীর্ষ কর্মকর্তাদের দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। এর মধ্যে আছে- ভূখণ্ড অদলবদল হলে তা হতে হবে পাল্টাপাল্টি, তাতে ইউক্রেন কিছু এলাকা থেকে সরলে রাশিয়াকেও অন্যগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

শনিবার রাতে দেওয়া বিবৃতিতে ইউরোপের নেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, “শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সীমানার পরিবর্তন হতে দেওয়া যাবে না।”

‘নিজেদের ভাগ্য বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আছে ইউক্রেইনের’, কূটনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখারও আশ্বাস দিয়ে এমনটাই বলেছেন তারা।

কেবল ইউক্রেনের সুরক্ষা নয়, ইউরোপের নিরাপত্তার জন্যও ‘কূটনৈতিক সমাধান’ খুবই জরুরি, ভাষ্য তাদের।

আলাস্কার বৈঠকে অংশ নিতে কেবল যে ইউক্রেইনই পীড়াপীড়ি করছে এমন নয়, ইউরোপও এ শান্তি আলোচনার অংশ হতে চায়।

ট্রাম্প যদি পুতিনের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তিতে পৌঁছান, যার ফলাফলের ওপর ইউরোপীয় নেতাদের প্রভাব নেই, তাহলে তা ইউরোপের জন্যও দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে বলে অনেক কিইভমিত্রই মনে করছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়