‘করোনা ঘরে বসে কাজ করা শিখিয়েছে’
সালামা তালুকদার, প্রিয় পার্সেল কুরিয়ার সার্ভিস এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর। পাশাপাশি কাজ করছেন অটিজম শিশুদের নিয়ে। ১৫ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে প্রিয় পার্সেল কুরিয়ার সার্ভিস। এ উপলক্ষে রাইজিংবিডির মুখোমুখি হন তিনি। কথা বলেন উদ্যোক্তা হওয়া, ই-কমার্সসহ প্রিয় পার্সেল এর যাত্রার গল্প। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফ বরকতুল্লাহ।
রাইজিংবিডি: প্রিয় পার্সেল কুরিয়ার সার্ভিস এর যাত্রা শুরু হচ্ছে ১৫ জানুয়ারি। যাত্রার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই?
সালমা তালুকদার: প্রিয় পার্সেল একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি। জানুয়ারির (২০২১) ১ তারিখ থেকেই তেজগাঁও সাতরাস্তার দক্ষিণ বেগুন বাড়িতে প্রিয় পার্সেলের প্রধান অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি থেকে আমরা কাস্টমার ডিল করবো। সেদিন আমরা পুরো ঢাকা শহরে একটি করে ফ্রি ডেলিভারি দেব। ১৬ জানুয়ারি থেকে আমাদের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে। পাশাপাশি ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় শাখা সাজানোর কার্যক্রম চলছে। অনলাইনভিত্তিক এই কার্যক্রমের আওতায় আমাদের সেবা যথাক্রমে- জেনারেল সার্ভিস, ই-কমার্স সার্ভিস, পারসোনাল সার্ভিস, করপোরেট লজিস্টিক, ফুড ডেলিভারি। আমাদের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে যে কেউ সংযুক্ত হয়ে সেবা নিতে পারবেন।
রাইজিংবিডি: কভিড-১৯ বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। এই মহামারির সময়ে নতুন একটি কোম্পানির যাত্রা অনেক চ্যালেঞ্জ- আপনার ভাবনা কী?
সালমা তালুকদার: আপনার চিন্তা সঠিক। তবে আমি বলব, সমস্যার সঙ্গেই আমাদের বসবাস। সমস্যা যেমন আছে তার সমাধানও আছে। সেই জায়গা থেকে আমার ভাবনা, কভিড শুরুতে আমাদের একটা জোর ধাক্কা দিতে পেরেছে সত্যি, কিন্তু জীবন বাঁচাতে হলে রিজিকের সন্ধান তো করতেই হবে। কভিডের কারণেই এখন অনেক কাজ অনলাইনভিত্তিক হয়ে গেছে। কেনাকাটা তো অবশ্যই। কভিডের আগে আমরা সরাসরি দোকানে গিয়ে পণ্য কেনায় আগ্রহী ছিলাম। কভিড আমাদের শিখিয়েছে ঘরে বসেও কিছু কাজ করা যায়। তাতে সময়, স্বাস্থ্য ও টাকার সাশ্রয় হয়। আগেও অনলাইন সেবা ছিল তবে কিছুসংখ্যক মানুষ ছাড়া এই সেবাটা সবাই গ্রহণ করতেন না। যা কভিডের কারণে অনেকটা বেড়েছে। তাছাড়া এই মহামারির কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। কভিডের ধাক্কায় চাকরি হারানো কিছু মানুষের রিজিকের ব্যবস্থা হবে প্রিয় পার্সেলের মাধ্যমে। সেই জায়গা থেকে প্রিয় পার্সেল নিয়ে আমরা আশাবাদী।
রাইজিংবিডি: সারা দেশে কতটি শাখা নিয়ে শুরু করতে যাচ্ছেন?
সালমা তালুকদার: শুরুতে আমরা ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ৫৬টি শাখা নিয়ে প্রিয় পার্সেলের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। আরও কিছু শাখার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।
রাইজিংবিডি: দেশে কুরিয়ার ও পার্সেল কোম্পানি অনেকগুলো। অনেকের সেবার মান নিয়ে সমালোচনা আছে। আপনারা কেমন সেবা দেবেন?
সালমা তালুকদার: আমরা বিশ্বাস করি, যেকোনো কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করলে সফলতা নিশ্চিত। সেই জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করবো আমাদের নিয়োগকৃত লোকজন যেন এই বিষয়ে সৎ থাকে। এ বিষয়গুলো মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা আছে। আর সেবার ক্ষেত্রে বলতে চাই, কুরিয়ার সার্ভিসের মূল সেবা হচ্ছে, সময় মতো কাস্টমারের হাতে পণ্য পৌঁছে দেওয়া, পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, এই বিষয় মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।
রাইজিংবিডি: প্রিয় পার্সেল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সালমা তালুকদার: প্রিয় পার্সেল কুরিয়ার সার্ভিস পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাবে। দেশের বিভিন্ন জেলায় এখনো যারা কুরিয়ার সেবা থেকে বঞ্চিত আছেন তারাও একসময় প্রিয় পার্সেলের সেবা পাবেন।
রাইজিংবিডি: আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প জানতে চাই।
সালমা তালুকদার: প্রিয় পার্সেল একটা লিমিটেড কোম্পানি। আপনি জানেন এটা একটা বড় বাজেটের কাজ। এখানে আমি একা নই। আমাদের সঙ্গে আরও অনেকে আছেন। আমরা একসঙ্গে শুরু করেছি। বিশেষ করে আমি যার নাম নিতে চাই, তিনি হচ্ছেন এস এম জসিম ভূঁইয়া। তার সঙ্গে কাজ করি ২০১৭ সাল থেকে। প্রথমে ভয় পাচ্ছিলাম। পরে জসিম ভাইয়ের উৎসাহে এখানে যুক্ত হই।
রাইজিংবিডি: আপনাকে ধন্যবাদ।
সালমা তালুকদার: আপনাকে ও রাইজিংবিডিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাইফ/মাহি
আরো পড়ুন