ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ননসেন্স ছড়ার স্রষ্টার ১৩৫তম জন্মদিন

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০২, ৩০ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১১:০৪, ৩০ অক্টোবর ২০২১
ননসেন্স ছড়ার স্রষ্টার ১৩৫তম জন্মদিন

কেউ তাকে বলেন ননসেন্স ছড়ার স্রষ্টা, কেউ বলেন উদ্ভটছড়ার রূপকার। এই লেখকের কবিতা, নাটক, গল্প, ছবি সবকিছুতেই ছিলো মজার ব্যঙ্গ ও কৌতুকরসে পূর্ণ। সুকুমার রায়ের ১৩৫তম জন্মদিন আজ।

সুকুমার রায়ের জন্ম ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতায়।  বাবা উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন শিশুতোষ গল্প ও জনপ্রিয়-বিজ্ঞান লেখক।  উপেন্দ্রকিশোরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  

অনেকের মতো সুকুমার রায়েরও একটি ডাকনাম আছে। সুকুমারের ডাকনাম ছিলো তাতা। এই নাম রাখার পেছনে রয়েছে রবীন্দ্র প্রেমের এক গল্প। সুকুমারের জন্মের বছরই প্রকাশিত হয়েছিলো রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস ‘রাজর্ষি’। তাতে ছিলো দুটি শিশুর চরিত্র- ভাই আর বোন। তাদের নাম ছিলো তাতা আর হাসি। তাই উপেন্দ্রকিশোর পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রথম মেয়ে সুখলতার ডাক নাম রেখেছিলেন ‘হাসি’ এবং ছেলে সুকুমারের ডাক নাম রেখেছিলেন ‘তাতা’।

শিশু-কিশোর উপযোগী বিচিত্র সাহিত্যকর্ম উপহার দিয়ে অমর হয়ে আছেন সুকুমার রায়।  তার ছড়া পড়া হয়নি, এমন মানুষ বাংলাদেশে নেই।  মজা এবং উপমা হিসাবে তার ছড়াগুলোর দু-চার লাইন অনেকেরই আয়ত্বে।  শিশুতোষ পাঠ্যে তার কোন না কোন ছড়া আছেই। 

যেমন- ‘রামগরুড়ের ছানা  হাসতে তাদের মানা/হাসির কথা শুনলে বলে/হাসব না-না, না-না!’ 

আবার ‘মাসী গো মাসী পাচ্ছে হাসি/ নিম গাছেতে হচ্ছে সিম,/ হাতির মাথায় ব্যাঙের বাসা/কাগের বাসায় বগের ডিম।’  

মাথায় কত প্রশ্ন আসে, দিচ্ছে না কেউ জবাব তার/সবাই বলে, মিথ্যে বাজে বকিসনে আর খবরদার!/ অমন ধারা ধমক দিলে কেমন করে শিখব সব?/ বলবে সবাই মুখ্য ছেলে, বলবে আমায় গো গর্দভ! 

কিংবা ষোলা আনাই মিছে শিরোনামের ছড়ায়- খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে/ বাবু দেখেন, নৌকাখানি ডুবলো বুঝি দুলে!/ মাঝিরে কন, একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি/ ডুবলো নাকি নৌকা এবার? মরব নাকি আজি?/ মাঝি শুধায়, সাঁতার জানো? - মাথা নাড়েন বাবু/ মূর্খ মাঝি বলে, মশাই, এখন কেন কাবু?/ বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে/ তোমার দেখি জীবন খানা ষোল আনাই মিছে। 

দেখা যায়, তিনি কথা-কবিতায় হাস্যরসের মধ্য দিয়ে সমাজচেতনার দিকেই পাঠককে নিয়ে গেছেন। 

বেঁচেছিলেন মাত্র মাত্র ছত্রিশ বছর। ১৯২৩ সালে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি একমাত্র পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় এবং স্ত্রীকে রেখে প্রয়াত হন।  এই স্বল্পায়ু জীবনে তিনি যা রেখে গেছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যে অনন্তকাল বাঁচিয়ে রাখবে।

ঢাকা/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়