ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সরাসরি: ইরানের হামলার আগে কাতারের ঘাঁটি থেকে সৌদিতে যুদ্ধবিমান ও রসদ সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ২৪ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৭:০৮, ২৪ জুন ২০২৫
ইরানের হামলার আগে কাতারের ঘাঁটি থেকে সৌদিতে যুদ্ধবিমান ও রসদ সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আগে কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটি থেকে বিমান ও ভারী সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন ঘাঁটিতে নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’ কাতারের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ থেকে পরিষ্কার ধারণা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র জানে ইরান সৌদি আরবে হামলা চালাবে না।তাছাড়া সমন্বয় করে হামলার বিষয়টিও পরিষ্কার হয়, যাতে হামলার প্রভাব সীমিত রাখা যায়।

আরো পড়ুন:

ওই কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে হামলা নিয়ে পরোক্ষভাবে সমন্বয় হয়েছে, যেখানে কাতার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে। রবিবার উভয় পক্ষ কাতারের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম সৌদি আরবে স্থানান্তর এবং হামলার সময়সুচি ও পরিসর নিয়ে এই সমন্বয়ের খবর ইরানের পক্ষ থেকে উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত দেয়।

হামলার পর বিশ্ববাজারেও এই বার্তা পৌঁছে গেছে। তেলের দাম হঠাৎ করে কমে গেছে। এ থেকে বোঝা যায়, এই সমন্বয়ের ঘটনাকে বাজার নিয়ন্ত্রকরা উত্তেজনা প্রশমনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছেন।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৫.৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭১.১১ ডলারে নেমে এসেছে।

আরব ও মার্কিন কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আইকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে আল-উদেইদ ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও রসদ সরিয়ে নেওয়া শুরু করে। এই পদক্ষেপটি ইঙ্গিত দেয়, যুক্তরাষ্ট্র জানত ইরান সম্ভাব্য কোন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে।

আল উদেইদ ঘাঁটিতে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছেন এবং এটি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) আঞ্চলিক সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার কয়েক ঘণ্টা পর নিশ্চিত করেন যে. ইরান আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল, যা বেসামরিক প্রাণহানি এড়াতে সহায়ক হয়েছে। ট্রাম্প এই হামলাকে উত্তেজনা প্রশমনের সুযোগ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তিনি ইসরায়েলকেও ইরানে হামলা বন্ধ করতে বলেছেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, “তারা (ইরান) তাদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে এবং আশা করি, আর কোনো বিদ্বেষ ছড়াবে না। আমি ইরানকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য, যার ফলে কোনো প্রাণহানি বা আহতের ঘটনা ঘটেনি।”

তিনি আরো বলেন, “এখন ইরান এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে অগ্রসর হতে পারে এবং আমি উদ্দীপনার সঙ্গে ইসরায়েলকেও একই কাজ করতে উৎসাহিত করব।”

যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরজুড়ে একাধিক ঘাঁটি রয়েছে।
ইরানের আল-উদেইদকে লক্ষ্যবস্তু করা সম্ভবত একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যাতে উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সীমিত রাখা যায়।

কাতার ও ইরান বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র সাউথ পার্স ভাগ করে ব্যবহার করে।

দোহা ঐতিহাসিকভাবে ইরানের সঙ্গে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তুলনায় বেশি সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং নিজেকে আঞ্চলিক সংঘাতের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থাপন করে।

কেন আল-উদেইদকে লক্ষ্য করল ইরান?
সৌদি আরব ইরানের চেয়ে কাতারের তুলনায় আরো দূরে এবং আকারেও অনেক বড়, যার ফলে সেখানে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালানো কঠিনতর। সৌদি আরব ও ইরান এতদিন ধরে ইয়েমেনসহ বিভিন্ন স্থানে পরোক্ষ সংঘাতে জড়িত ছিল। তবে সম্প্রতি উভয় দেশ ধীরে ধীরে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে হাঁটছে।

এই প্রেক্ষাপটে কাতারে যুক্তরাষ্ট্র আল উদেইদকে ইরানের লক্ষ্যবস্তু বানানা থেকে বোঝা যায়, তারা রিয়াদকে প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত রাখতে চেয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়