পুতিন-শির সঙ্গে মোদির বৈঠক ‘লজ্জাজনক’: ট্রাম্পের উপদেষ্টা

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের আবারো কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। 

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠককে তিনি ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার (৩১ আগস্ট) এসসিও সম্মেলনে যোগ দিয়ে পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) নাভারো বলেন, “মোদিকে শি জিনপিং ও পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখে লজ্জা লাগে। তিনি কী ভাবছেন বুঝতে পারছি না। আশা করি তিনি বুঝতে পারবেন যে, তার থাকা উচিত আমাদের পাশে, রাশিয়ার পাশে নয়।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ করার পর থেকে নাভারো বারবার অভিযোগ করে আসছেন, ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে যাচ্ছে এবং এর আয় ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে ব্যবহার করছে মস্কো। এটি এমন একটি যুদ্ধ, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত বছর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ করতে পারবেন বলে দাবি করলেও, এখন পর্যন্ত তিনি তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। 

ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা এর আগেও ভারতের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে বলেছিলেন, ভারত হলো ‘শুল্কের মহারাজা’। তিনি আরো বলেছিলেন, বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ভারতের শুল্কহার সবচেয়ে বেশি এবং দেশটি তা স্বীকার করতেও রাজি নয়।

তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে দ্বিমুখী সমস্যা রয়েছে। অন্যায্য বাণিজ্যের কারণে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক ও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু ভারত বারবার এই বিষয়টি অস্বীকার করে চলেছে, অথচ প্রমাণ আছে- তারা রুশ তেল কিনছেই।”

ভারত রাশিয়ার তেল ছাড়কৃত দামে কিনছে- এ নিয়ে আরো তীব্র সমালোচনা করে নাভারো বলেন, “এতে সাধারণ ভারতীয়দের ক্ষতির বিনিময়ে উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণরা মুনাফা করছে।” তিনি এমনকি ভারতকে ‘ক্রেমলিনের মানি লন্ড্রির জায়গা’ বলেও আখ্যা দেন।

তার অভিযোগ, ভারতীয় শোধনাগারগুলো রুশ তেল সস্তায় কিনে প্রক্রিয়াজাত করে বাড়তি দামে বিদেশে রপ্তানি করছে। তিনি বলেন, “এতে ইউক্রেনীয়রা মরছে, আর আমাদের করদাতাদের আরও টাকা দিতে হচ্ছে।”

নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কো ও বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।