ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাসে উঠতে জোরাজুরি, তোয়াক্কা নেই স্বাস্থ্যবিধির

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৮, ৩১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৬:৩০, ৩১ মার্চ ২০২১
বাসে উঠতে জোরাজুরি, তোয়াক্কা নেই স্বাস্থ্যবিধির

ছবি: রাইজিংবিডি

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানায় ১৮টি নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করার নির্দেশনা দেয় সরকার। নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী এবং ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে রাজধানীসহ সারা দেশে পরিবহন চলাচল করলেও যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না এই নিয়ম। 

রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাসেই অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে এমন অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।  এ নিয়ে যাত্রী এবং বাসচালক-সহযোগীদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই কথা কাটাকাটি করতেও দেখা গেছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, ফার্মগেট এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় শত শত যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন।  বাস চলে যাচ্ছে কিন্তু কেউ বাসে উঠতে পারছেন না।  কারণ বাসের দরজা বন্ধ।  তবে কিছু কিছু বাসের যাত্রী নামানোর জন্য গেট খুললেই রাস্তায় অপেক্ষা করা অন্যান্য যাত্রীরা যোর করে বাসে উঠতে দেখা গেছে। ঠিক তখনি স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বাসের হেলপার যতই তাদের অনুরোধ করে বাসে না ওঠার জন্য তা কেউ কানেই নিচ্ছে না। সবাই তাড়াহুড়া করে বাসে উঠে পড়ছেন। 

রাজধানীর শ্যামলী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রজাপতি পরিবহনে উত্তরা যাওয়ার জন্য কয়েকজন যাত্রীকে জোর করে উঠতে দেখা যায়। নিয়ম অনুযায়ী বাসে ৫০ শতাংশ যাত্রী ছিল।  সবাই এক সিট ফাঁকা রেখেই বসেছেন। তাই অতিরিক্ত যাত্রীদের সিটে বসতে দিচ্ছেন না বসে থাকা যাত্রীরা। যার কারণে দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে শ্যামলী থেকে বাসে ওঠা যাত্রীদের। ঠিক তখনি বাসের ড্রাইভার ও হেলপাড়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় বসে থাকা বাসের যাত্রীদের।  তাদের দাবি কেন বাসের গেট খোলা হলো আর কেন বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়েছে। আর হেলপার বলে আমি তো তুলতে চাইনি।  জোর করে বাসে উঠেছে। 

অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসে কেন উঠেছেন- সে বিষয়ে কথা হয় শ্যামলী থেকে বাসে ওঠা যাত্রী মোহাম্মদ মাসুম হোসেনের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, গত প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।  কিন্তু বাস আসলেও দরজা খোলা পাচ্ছি না।  অনেক চেষ্টা করেছি কয়েকটি বাসে ওঠার জন্য কিন্তু পারিনি। তাই জোর করে এই বাসে উঠেছি। 

তিনি বলেন, সকাল থেকেই দেখছি হাজার হাজার মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু বাসে উঠতে পারছে না।  অনেকের অফিস আছে, জরুরি কাজ থাকতে পারে কারো কারো।  সবারই প্রয়োজন রয়েছে তাই আমি বলবো এমন হলে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হোক। তাতে হয়তো এই দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। 

অপরদিকে বাসে সিটে বসা যাত্রী আসমা আক্তার বলেন, সরকার নিয়ম করেছে বাসে অর্ধেক যাত্রী ওঠানোর। যার কারণে বাসের ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। তাহলে আমার কথা হচ্ছে বাসে কেন মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে? আমরা তো কেউ কম ভাড়া দিচ্ছি না। 

যাত্রীদের এমন অভিযোগ সত্য নয় বলে বাসের হেলপার রাকিব হোসেন বলেন, যাত্রীরা যা বলছেন সেটা সত্যি নয়।  আমরা আজ সকাল থেকেই বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছি না।  কিন্তু রাস্তায় প্রচুর মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাসের জন্য। তারা সুযোগ পেলেই বাসে জোর করে ওঠে পড়েন।  তাদের না করলেও তারা শুনছেন না।  অথচ তাদের জন্য গালি শুনতে হয় আমাদের মতো সাধারণ হেলপারদের। 

আশির্বাদ পরিবহনের চালক মোসলেম হোসেন জানান, আমরা চেষ্টা করছি বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই গাড়ি চালাতে। কিন্তু প্রতিটি স্টপেজে অতিরিক্ত যাত্রী গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কোথাও কোথাও জোর করে যাত্রী উঠে যাচ্ছেন।  

এদিকে বাসগুলোতে দেখা গেছে, যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়েছে, তা অধিকাংশ বাসে মানছে না। যাত্রীদের জন্য হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখার কথা থাকলেও তা নেই। আবার অনেক চালক বা হেলপার মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছেন। 

হাসিবুল/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়