ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ২০ এপ্রিল ২০২৪  
বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি

জাতীয় প্রেস ক্লাবের তামাক কর ও মূল্য সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সব ধরনের তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)।

শনিবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আসন্ন অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও মূল্য সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠন দুটি।

সংবাদ সম্মেলনে তামাক কর ও মূল্যবিষয়ক বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য ক্রমান্বয়ে সস্তা হয়ে পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তামাকের কারণে লাখ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু, অসুস্থতা, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি প্রভৃতি বিবেচনায় এনে আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর বলেন, বর্তমানে ৭৫ শতাংশ সিগারেট ব্যবহারকারী নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা। অথচ, এই স্তরে সম্পূরক শুল্ক হার মাত্র ৫৮ শতাংশ, এটা বাড়িয়ে কমপক্ষে ৬৩ শতাংশ করা হলে সিগারেটের ব্যবহার কমবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। এই বর্ধিত রাজস্ব চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত সাতটি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয় যে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাশ মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ, একই সময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির দাবি তুলে বলা হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৫ লাখ তরুণসহ মোট ১১ লাখের অধিক মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।

হাসান/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়