ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফ্লু ভাইরাস কোথায় কতদিন বাঁচে?

দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৯, ৭ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ৭ নভেম্বর ২০২০
ফ্লু ভাইরাস কোথায় কতদিন বাঁচে?

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু হলো ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। করোনাভাইরাসের মতো এই রোগেও শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হয়ে থাকে এবং এর উপসর্গও সর্দি-জ্বরের উপসর্গের মতোই।

বাংলাদেশে বছরজুড়েই ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হতে পারে। কিন্তু শীতে প্রতিবারই এর প্রকোপ বেড়ে যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ সমস্যার জন্য দায়ী ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস পরিবেশে বাড়ে। তাই আসন্ন শীতকালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু’তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

শিশু, বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা এবং কম রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফ্লু জটিল রূপ নিতে পারে। ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর সারাবিশ্বে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মারা যায়।

আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি বা ড্রপলেস স্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাস সহজেই ছড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো ফ্লু এড়াতে সহায়তা করবে।

নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এই ভাইরাস কোন কোন বস্তু বা তার উপরিভাগে কতদিন বাঁচে, তা জানা থাকলে আরো বেশি সতর্ক থাকা সম্ভব হবে। কারণ সেসব বস্তু ধরার পর হাতের মাধ্যমেই ফ্লু ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে শরীরে। তাই জেনে নিন ফ্লু ভাইরাসের আয়ুষ্কাল কোথায় কতক্ষণ বা কতদিন-

* ফ্লু সৃষ্টিকারী ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস স্টেইনলেস স্টিল এবং প্লাস্টিকের ওপর বাঁচে ৩ দিন পর্যন্ত। আমরা প্রতিদিন যেসব স্টেইনলেস স্টিল এবং প্লাস্টিকের বস্তু ধরি, সেগুলোর মধ্যে দরজার হাতল, রেফ্রিজারেটর, চাবি, চামচ, রান্নার পট ও প্যান, খাবারের কারখানার যন্ত্রপাতি, রিমোট কন্ট্রোল, ভিডিও গেম কন্ট্রোলার, লাইট ও ফ্যানের সুইচ, কম্পিউটার কিবোর্ড ও মাউস, এটিএম বুথের বাটন, খেলনা এসব অন্যতম।

* জামা-কাপড়ের ওপর ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। বাইরে বা অফিস থেকে ফিরে প্রতিদিন জামা-কাপড় ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে আপনার আশেপাশে কেউ যদি হাঁচি-কাশি দেয় তাহলে জামা-কাপড় ধুয়ে ফেলতে হবে। জামা-কাপড়ের পাশাপাশি বিছানা এবং বালিশের কভার ভাইরাসটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ হটস্পট হতে পারে। ওয়াশিং মেশিন যদিও কাপড় জীবাণুমুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়নি, তবে এতে ব্লিচ দিলে জীবাণু থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে। কেননা এরফলে ওয়াশিং মেশিনের তাপমাত্রা বাড়ে আর ফ্লু ভাইরাস ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রায় টিকতে পারে না।

* ২০০৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ত্বকের ওপর ৫ মিনিট পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে ফ্লু ভাইরাস। এর কারণ হলো, আমাদের ত্বক অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল পদার্থ তৈরি করে, যা জীবাণু ধ্বংস করতে এবং সংক্রমণ থেকে আমাদের সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। তবে শ্লেষ্মার মধ্যে মিশলে ফ্লু’র জীবাণু বেশিদিন বাঁচতে সক্ষম হয়। যার মানে আপনি হাতের মধ্যে হাঁচি দেওয়ার পর দরজার হাতল জাতীয় কিছু স্পর্শ করলে তা দূষিত হবে।

ফ্লু’র জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো, সাবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া। ঘরের বাইরে থাকলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার করা। ফ্লু’র জীবাণু ধ্বংস করতে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহলসমৃদ্ধ হ্যান্ড সানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।

ফ্লু’র উপসর্গ

সাধারণ সর্দি-জ্বর ও ফ্লু’র উপসর্গ একইরকম হওয়ায় মানুষ অনেক সময় দুটির পার্থক্য বুঝতে পারে না। ফ্লু হলে সাধারণ সর্দি জ্বরের মতোই মাথা ব্যাথা, গলা ব্যাথা, মাংসপেশিতে ব্যাথা, হাঁচি, শুকনো কাশি, জ্বর, স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

তবে ফ্লু’য়ের উপসর্গ খুব কম সময়ের মধ্যে প্রকাশ পায়। যেমন হঠাৎ করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তীব্র জ্বর আসার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। অন্যদিকে সর্দি-জ্বরের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ধীরে জ্বর বাড়তে থাকে। এছাড়া ফ্লু’তে আক্রান্ত হলে মানুষ হঠাৎ করে শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করে, যা সাধারণ সর্দি-জ্বরের ক্ষেত্রে হয় না।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়