ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মারা গেলেন নিউ জিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট জয়ী অধিনায়ক

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০১, ১৪ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৯:৫৭, ১৪ অক্টোবর ২০২০
মারা গেলেন নিউ জিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট জয়ী অধিনায়ক

জন রেইড

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংসের সমাপ্তি ঘটলো। বুধবার ৯২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন দেশের প্রথম টেস্ট জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া জন রিড। নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়কত্ব ছাড়াও জাতীয় দলের নির্বাচক ও আইসিসির ম্যাচ রেফারি ছিলেন তিনি এবং ১৯৫৯ সালের উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারও হন। 

দেশের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ক্রিকেটার ছিলেন রিড। ১৯৪৯ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডে অভিষেক হয় তার। ১৯৬৫ সালে অবসর নেওয়ার আগে ৫৮ টেস্ট খেলে করেছিলেন ৩ হাজার ৪২৮ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৬৩ সালে ক্রাইস্টচার্ট টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এসেছিল তার ছয় সেঞ্চুরির একটি। ওই ইনিংসে পুরো নিউ জিল্যান্ড করেছিল ১৫৯ রান, যার মধ্যে রিডের একারই ১০০। এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংসে শতকের রেকর্ড হিসেবে টিকে আছে এটি।

ফাস্ট-মিডিয়াম বোলারও ছিলেন রিড, নিয়েছেন ৮৫ উইকেট এবং প্রয়োজেন উইকেটকিপিং করতেও পারতেন দক্ষতার সঙ্গে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার অভিষেক সিরিজের শেষ টেস্টে স্টাম্পের পেছনে দাঁড়ান তিনি। অথচ তার স্বপ্ন ছিল রাগবি খেলোয়াড় হওয়ার। কিন্তু হার্টের অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেই স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয় তাকে। নিঃসন্দেহে তিনি ভুল করেননি। তার নেতৃত্বে ১৯৫৬ সালে প্রথমবার টেস্ট জেতে ব্ল্যাক ক্যাপরা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রথম টেস্ট খেলার ২৬ বছর পর নিউ জিল্যান্ড জেতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ, তাদের ৪৫তম ম্যাচে। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গৌরবোজ্জ্বল এক অধ্যায় তার ক্যারিয়ারে যুক্ত করেন। পাঁচ ম্যাচের ওই সিরিজ ড্র হওয়ার পথে প্রথম অ্যাওয়ে টেস্ট জেতে নিউ জিল্যান্ড। জোহানেসবার্গে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১৪২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

নিউ জিল্যান্ডকে ৩৪ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া রিড ১৯৬৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের নেতৃত্ব দেন, যেই দলে সহঅধিনায়ক ছিলেন স্যার গারফিল্ড সোবার্স। তার অধীনে ম্যাচ খেলেছিলেন চার্লি গ্রিফিথ, ওয়েস হল, হানিফ মোহাম্মদ ও রোহান কানহাই। 

সব মিলিয়ে রিড প্রথম শ্রেণিতে রান করেছেন ১৬ হাজার ১২৮, ছিল ৩৯টি সেঞ্চুরি। বল হাতে নিয়েছেন ৪৬৬ উইকেট। স্টাম্পিং করেছেন সাতটি। তার ক্যারিয়ার সেরা ২৯৬ রান এসেছে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের হয়ে। ওই ইনিংসে ৩৫ চার ও ১৫ ছয় হাঁকান তিনি, যা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড হয়ে ছিল তিন দশক ধরে। পরে এটি ভাঙেন গ্লুচেস্টারশায়ারের অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস।

নিউ জিল্যান্ডের নির্বাচকও ছিলেন রিড। অবসরের পর অল্প সময়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হন। পরে ফিরে আসেন নিউ জিল্যান্ডে। ১৯৯৩ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ম্যাচ রেফারি হিসেবে ৫০ টেস্ট ও ৯৮ ওয়ানডে পরিচালনা করেন। পরের বছর নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

দেশের ক্রিকেটে রিডের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বেসিন রিজার্ভ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে একটি গেট তৈরি করা হয়েছে তার নামে। রিডের ছেলে রিচার্ডও ছিলেন ক্রিকেটার, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ৯ ওয়ানডে খেলেন। ২০১৩ সালে পাকস্থলীর ক্যান্সার ধরা পড়ার পর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে রিডের। 

রিড মারা যাওয়ায় নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে প্রবীণ ক্রিকেটার এখন ট্রেভর ম্যাকমাহন (৯০ বছর ও ৩৪১ দিন বয়সী)। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে ৫ টেস্ট খেলেন ম্যাকমাহন, যার সবগুলো খেলেছিলেন রিড।

ঢাকা/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়