ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

টটেনহ্যাম ও ইংল্যান্ড লিজেন্ড গ্রিভসের মৃত্যু

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  
টটেনহ্যাম ও ইংল্যান্ড লিজেন্ড গ্রিভসের মৃত্যু

১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ও টটেনহ্যাম হটস্পারের লিজেন্ড স্ট্রাইকার জিমি গ্রিভস ৮১ বছর বয়সে মারা গেছেন। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) তার মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ড এবং তার সাবেক ক্লাব চেলসি, ওয়েস্ট হ্যাম ও টটেনহ্যাম।

ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড জাতীয় দলের জার্সিতে ৫৭ ম্যাচ খেলে করেন ৪৪ গোল। দেশের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের আসরে তার পথচলা শেষ হয় গ্রুপেই। উরুগুয়ে, মেক্সিকো ও ফ্রান্সের বিপক্ষে তিন ম্যাচেই ছিলেন গ্রিভস। কিন্তু ফরাসিদের ২-০ গোলে জেতার ম্যাচে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের কঠিন চ্যালেঞ্জে তার বিশ্বকাপ শেষ হয় যায়। তার স্থলাভিষিক্ত জিওফ হার্স্ট ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী ওই ফাইনালে মাঠে থাকা ১১ জনকেই দেওয়া হয় বিশ্ব জয়ীর মেডেল। পরে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রচেষ্টায় ২০০৯ সালে তাকে দেওয়া হয় পদক, যা ২০১৪ সালে নিলামে তোলেন তিনি।

গ্রিভসের স্বর্ণযুগ কেটেছে টটেনহ্যামে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ২৭৯ ম্যাচ খেলে ২৬৬ গোল করেছেন। এখনও স্পারদের রেকর্ড শীর্ষ গোলদাতা তিনি। শীর্ষ লিগ ক্লাবে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে এসি মিলান ও ওয়েস্ট হ্যামেও খেলেছেন গ্রিভস, যেখানে করেছেন ৩৬৬ গোল। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে এই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি ৪৬ বছর ধরে টিকে থাকার পর ২০১৭ সালে ভাঙে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছে।

অ্যালকোহলে আসক্তির কারণে ৩১ বছর বয়সেই শেষ হয়ে যায় গ্রিভসের ক্যারিয়ার। এছাড়া শেষ দিকে আরও স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েন তিনি। ২০১২ ও ২০১৫ সালে স্ট্রোকও হয় তার। ক্লাব লিজেন্ডের মৃত্যুতে স্পাররা এক বিবৃতি দেয়, ‘গ্রেট জিমি গ্রিভসকে হারানোয় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত, তিনি শুধু টটেনহ্যাম হটস্পারের রেকর্ড গোলদাতা নয়, এই দেশের সবচেয়ে সেরো মার্কসম্যান ছিলেন। আজ সকালে (১৯ সেপ্টেম্বর রোববার) ৮১ বছর বয়সে নিজ বাসায় পরপারে চলে গেছেন জিমি।’

ইংল্যান্ড তাদের টুইটারে শোক প্রকাশ করে, ’৮১ বছর বয়সে জিমি গ্রিভসের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। জিমি আমাদের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন এবং থ্রি লায়নদের হয়ে ৫৭ ম্যঅচে ৪৪ গোল করেছেন। তার পরিবার, বন্ধু ও সাবেক ক্লাবের প্রতি রইল আমাদের সমবেদনা।’

১৯৪০ সালে পূর্ব লন্ডনে জন্ম নেওয়া গ্রিভস চেলসিতে চুক্তি করেন এবং ১৭ বছর বয়সে তার পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয়। ১৬৯ ম্যাচে ১৩২ গোল করেন তিনি, বয়স ২০ এ যেতেই ১০০ লিগ গোল তার নামের পাশে। এরপর ইতালির নজর কেড়ে ১৯৬১ সালে এসি মিলানে পাড়ি জমান। কিন্তু ১২ ম্যাচ খেলে এক মৌসুমে কেবল ১২ গোল করেন। ১৯৬২ সালে ৯৯ হাজার পাউন্ডে গ্রিভস টটেনহ্যামের হয়ে ইংল্যান্ডে ফেরেন এবং এফএ কাপ ফাইনালে গোল করে ওই ম্যাচে তাদের শিরোপা জেতান। উত্তর লন্ডন ক্লাবে ৯ মৌসুম কাটান তিনি এবং ক্লাবের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল একটি দশক কেটেছিল স্পারদের। ১৯৬৭ সালেও তাদের এফএ কাপ জেতান গ্রিভস, আর ১৯৬৩ সালে ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপও।

১৯৫৯ সালে গ্রিভসের অভিষেক হয় ইংল্যান্ডে এবং পেরুর বিপক্ষে ৪-১ এ জয়ের ম্যাচে গোল করেন। সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক করা ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় তিনি এবং ছয় হ্যাটট্রিকের প্রথমটি করেন ১৯৬০ সালে লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে ৮-০ গোলের জয়ে। জাতীয় দলে তার ৪৪ গোলের সবশেষটি করেন ১৯৬৭ সালে এবং দেশের সর্বকালের শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় ওয়েন রুনি, ববি চার্লটন ও গ্যারি লিনেকারে পরে তার অবস্থান।

১৯৭০ সালে গ্রিভস পাড়ি জমান লন্ডনের আরেক ক্লাব ওয়েস্ট হ্যামে। সেখানে দুই মৌসুম কাটানোর পর তার ক্যারিয়ার নিম্নুমখী হয়। অ্যালকোহল আসক্তি ও ফিটনেসের কারণে শীর্ষ লিগে তিনি টিকে ছিলেন আর দুটি বছর। ওয়েস্ট হ্যামের হয়ে এই সময়ে ৪০ ম্যাচে করেন ১৩ গোল। ১৯৭১ সালে অবসর নেন ৩১ বছর বয়সেই।

অবসরের পর গ্রিভস ব্রডকাস্ট মিডিয়ায় নাম লেখেন এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সাবেক লিভারপুল স্ট্রাইকার ইয়ন সেন্ট জনকে নিয়ে জনপ্রিয় টক শো সেইন্ট অ্যান্ড গ্রিভসি উপস্থাপনা করেন।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়