ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মোস্তাফিজকে চাওয়ার ‘সাহসই’ দেখাচ্ছেন না মুমিনুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৯, ১৯ মে ২০২২  
মোস্তাফিজকে চাওয়ার ‘সাহসই’ দেখাচ্ছেন না মুমিনুল

‘সবার আগে দেশের খেলা’- সাকিব আল হাসান ২০২১ সালে দেশের খেলা বাদ দিয়ে যখন আইপিএল খেলতে গিয়েছিলেন, তখন মোস্তাফিজুর রহমান এভাবেই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন। অথচ দেশের খেলা বাদ দিয়ে তিনি নিজেই এখন ব্যস্ত আইপিএল খেলতে।

অর্থের শক্তি অবস্থানও পাল্টে দেয়। তাইতো টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের বলতে বাধেনি, ‘আইপিএল খেললে হয়তো ২-৪ কোটি টাকা পাবে। ক্রিকেট কি টাকার চেয়ে বড় নয়? দেশ কি টাকার চেয়ে বড় নয়?’

টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চান না বলে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে লাল বলের ক্রিকেটে সই করেননি মোস্তাফিজ। আইপিএল খেলতে চেয়ে অনাপত্তিপত্র পেয়েছেন পুরো মৌসুমের জন্য। কিন্তু বিসিবি সভাপতি সাফ জানিয়েছেন, ‘আমাদের যখন তাকে দরকার হবে, তখন অবশ্যই সে টেস্ট খেলবে।’ প্রয়োজনে আইপিএল থেকেও দেশে ফেরানো হবে।

কিন্তু মোস্তাফিজকে কি টেস্টে প্রয়োজন আছে? টেস্ট অধিনায়ক কি তার প্রয়োজন অনুভব করছেন? মাশরাফি অধিনায়ক থাকাকালে একাধিক ক্রিকেটারকে জোর করে চেয়ে পেয়েছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট দলে নিতে রাজি হননি, কিন্তু মাশরাফির তাদের ওপর ছিল বিশ্বাস। পরবর্তীতে খেলে পারফর্মও করেছেন তারা। তামিম অধিনায়ক হয়ে সেই একই কাজ করেছেন। কিন্তু মুমিনুল মোস্তাফিজকে চাওয়ার ‘সাহসই’ যেন পাচ্ছেন না।

টেস্ট অধিনায়ক বল ঠেলে দিয়েছেন বিসিবির কোর্টে, ‘ওটা (মোস্তাফিজকে টেস্টে নেওয়া) তো বোর্ডের ব্যাপার। বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই হবে। যা চিন্তা করবে সেটাই। আমার কাছে মনে হয়, এটা বোর্ডের ওপর ছেড়ে দেওয়া ভালো।’

অধিনায়কের সাফ কথা, ‘বোর্ড ডাকলে অবশ্যই খেলবে। এখন যদি অবশ্যই দরকার হয়, তাহলে তো প্রয়োজন। এখন দলের সেরা দুজন পেসার ইনজুরিতে। সে যদি খেলতে পারে, তাহলে তো ভালোই।’

২৬ বছর বয়সী মোস্তাফিজের এখনই টেস্টে অনাগ্রহ। এমনকি তাকে যেন টেস্টে বিবেচনা না করা হয়, সেজন্য নির্বাচকদের কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে এখন খেলানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন তারা। তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম ইনজুরিতে পড়ায় দলের পেস আক্রমণ অনেকটাই নড়বড়ে। এজন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাকে টেস্টেও খেলাতে চান নির্বাচকরা।

কিন্তু মুমিনুল তার অভিজ্ঞতাকে খুব একটা মূল্যায়নই করছেন না, ‘আমি জানি না মোস্তাফিজ কয়টা টেস্ট খেলেছে! আর বাংলাদেশের কোনো পেসারই অভিজ্ঞ না। শুনলে অবাকই হবেন। সবার মিলিয়ে ২০টা টেস্ট খেলা হয়েছে কি না জানি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এখন অভিজ্ঞতা খুব একটা বড় বিষয় না ওদের কাছে। আর মোস্তাফিজের ব্যাপারে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’ পাশাপাশি তার ফিটনেস নিয়েই যত চিন্তা মুমিনুলের, ‘এখানে আপনার দেখতে হবে মোস্তাফিজ আসলে লাল বলে কতদিন খেলছে। অনেক কিছু নির্ভর করছে। কতদিন খেলেছে না খেলেছে, আর ফিটনেস তো আছেই।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মোস্তাফিজের টেস্ট অভিষেক ২০১৫ সালে। বাঁহাতি এই পেসার মাত্র ১৪ টেস্ট খেলেছেন। কোভিডের পর বায়ো বাবলের কারণে নির্বাচকদের টেস্ট দলে বিবেচনা করতে মানা করেছেন। এর আগে বিভিন্ন কারণে টেস্ট দলে থাকতে চাইতেন না তিনি।

তবে মোস্তাফিজের এই ‘পিক টাইমে’ তাকে তিন ফরম্যাটেই চাইছেন খালেদ মাহমুদ, ‘মোস্তাফিজের এখন সেরা সময় যাচ্ছে। তার উচিত দেশের হয়ে খেলা। দেশের হয়ে পারফর্ম করা।’ দলের টিম ডিরেক্টর যতটা জোরালো কণ্ঠে মোস্তাফিজকে প্রত্যাশা করছেন, অধিনায়ক তেমন কিছুই করছেন না। এখানেই যেন টেস্ট ক্রিকেটে মোস্তাফিজের ফেরার বিষয়টি ঝুলে থাকছে!

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়