ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘মুশফিক-লিটন জুটি আমার কোচিং ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা’

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২১, ২৩ মে ২০২২  
‘মুশফিক-লিটন জুটি আমার কোচিং ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা’

ঢাকা টেস্ট শুরুর সকালটাকে যদি অসুন্দর বলা হয় তাহলে শেষটাকে অনিন্দ সুন্দরের তকমা দেওয়া-ই যায়। যার পেছনের দুই নায়ক মুশফিকুর রহিম-লিটন কুমার দাস। দুজনের অপ্রতিরোধ্য, অবিচ্ছিন্ন লড়াইয়ে হাসিমুখেই দিন শেষ করে লাল সবুজের দল।

অস্বস্তির শুরুর পর মুশফিক-লিটনের এমন মহাকাব্যিক ব্যাটিংয়ে ড্রেসিংরুমেও দেখা দেয় স্বস্তির ছাপ। হাসিমুখে বারবার ক্যামেরায় ধরা দিয়েছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। দুই শিষ্যর সেঞ্চুরির পর করতালি দিয়ে অবিবাদন জানাতেও ভুল করেননি।

২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর মহাবিপর্যয়ের পর দুজনে গড়েন ২৫৩ রানের ঐতিহাসিক রেকর্ড জুটি। তাতেই যেন মুগ্ধতার কোনো শেষ নেই ডমিঙ্গোর। বলেই দিয়েছেন তার কোচিং ক্যারিয়ারের দেখা অন্যতম সেরা জুটি।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমার কোচিং ক্যারিয়ারে টেস্টে দেখা এটাই সবচেয়ে সেরা জুটি। ২৪ রানেই আমাদের পাঁচ উইকেট চলে গেছিল। অনেক চাপের মধ্যে ছিলাম, দুই ব্যাটারের এটা অসাধারণ চেষ্টা ছিল। অবশ্যই আমরা সকালে ভালো শুরু করতে পারিনি। কিছু ভুল শট ছিল। টেস্ট ক্রিকেট কঠিন, কিন্তু ছেলেরা অসাধারণ স্কিল ও ক্যারেক্টার দেখিয়েছে আমাদের ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে।’

বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে মুশফিক-লিটন ষষ্ঠ উইকেটে প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরির জুটি গড়েন। যেটি দিন শেষে ২৫৩ রানে থামে। এতোদিন সর্বোচ জুটির রেকর্ড দখলে ছিল মুশফিক-আশরাফুলের। ২০১৪ সালে গল টেস্টে ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে ১৯১ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। আজও আছেন মুশফিক, তবে বদলেছে সঙ্গী।

লিটন-মুশফিক দুজনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। মুশফিকের তুলনায় লিটন ছিলেন কিছুটা আগ্রাসী। আর মুশফিক পুরোপুরি টেস্ট মেজাজে। দুইপাশ থেকে দুজনে দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৩ চারে প্রথমে লিটন সেঞ্চুরির দেখা পান ১৪৯ বলে। টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের সেরা ইনিংস (১৩৫*) খেলেই দিনের ইতি টানেন।

লিটনকে নিয়ে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমার মনে হয় টেকনিক খুব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। লিটন তার খেলাকে মূল্য দিচ্ছে। সে খুব ভালো ব্যাটিং টেকনিকে উন্নতি করেছে। সে গত দেড় বছর ধরে টেস্টের জন্য প্রস্তুত হওয়ার ভালো উপায় পেয়েছে। জানে কখন কাজ করতে হবে, আর কখন হবে না। সে ভালো একটা রুটিন মেনে চলছে’

‘কিন্তু এটা তৃতীয় সেঞ্চুরি। তার এখনও অনেক দূর যেতে হবে। সে অসাধারণ খেলোয়াড়, দেখার জন্য শান্তির। তার হাতে অনেক সময়। কিন্তু আশা করি এটা সফল টেস্ট ক্যারিয়ারের মাত্র শুরু। সে গত দেড় বছর ধরে দারুণ কাজ করছে। কিন্তু তারটা এখনও শেষ হয়নি’-আরও যোগ করেন ডমিঙ্গো।

মুশফিক ৯ চারে ১১২ বলে ফিফটির পর যেন আরও খোলসবন্দি হয়ে পড়েন। পরের পঞ্চাশ করে সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে মেরেছিলেন মাত্র ২টি চার! শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১১৫ রান করে। মুশফিককে নিয়ে ডমিঙ্গো বলেন, ‘সে অন্য অনেকের চেয়ে বল বেশি হিট করে, আমি এমনটা এর আগে দেখিনি। তার ভালো করার যে তাড়ণা ও ইচ্ছে তা অসাধারণ। আমি মনে করি খেলোয়াড়েরা কিছু ভালোবাসা ও সমর্থন চায় যখন ব্যাপারগুলো ঠিকঠাক যায় না।’

চট্টগ্রামের পর ঢাকাতেও সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিক। রানে ফেরার জন্য মুশফিককের টেকনিক নিয়ে কাজ করার কথাও বলেছেন ডমিঙ্গো, ‘সে গত কয়েক ম্যাচে নিশ্চিত টেকনিক নিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু সে জানে কীভাবে রান করতে হয়। এটা আসলে পুরোটাই খারাপ সময়ে খেলোয়াড়কে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপার। কেবল ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং তাদের সামর্থ্যে আস্থা রাখতে হবে।’

রিয়াদ/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়