ঢাকা     শনিবার   ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পরিশ্রম, একাগ্রতার কথা বললেন মুশফিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২২, ২৫ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৮:৪৯, ২৫ আগস্ট ২০২৪
পরিশ্রম, একাগ্রতার কথা বললেন মুশফিক

কেবল গলই ব্যতিক্রম। অথচ সেটাই ছিল প্রথম। মুশফিকুর রহিমের নামের পাশে রয়েছেন তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথমটি গলে কাটায় কাটায় দুইশ। পরেরটি ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ২১৯। দুই বছর পর আবার একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২০৩*। সেই তালিকায় যোগ হতে পারত ২০২৪ রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট। হয়নি কেবল ৯ রানের জন্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯১ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশের লিটল মাস্টার।

মুশফিকের তিন ডাবল সেঞ্চুরির দুটিতেই বাংলাদেশ জিতেছে। ড্র করেছে একটি। এবার মুশফিক ডাবল সেঞ্চুরি না পেলেও তার ঝকঝকে ১৯১ রানে পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে বাংলাদেশ। ডাবল সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ মুশফিক ভুলে গেছেন দলের জয়ে। পরিশ্রম, সততা, নিবেদন, একাগ্রতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মুশফিক। অনুশীলনে সবার আগে আসা। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করা। সবার শেষে যাওয়া এসব উদাহরণ ভুড়িভুড়ি আছে। এবারের টেস্টের আগে মুশফিক যা করেছেন তা নিশ্চিতভাবেই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আরো পড়ুন:

জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যখন ছুটিতে তখন বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে যোগ দিয়ে টানা অনুশীলন করেন মুশফিক। এরপর বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে উড়ে আসেন পাকিস্তানে। বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্প ও ‘এ’ দলের হয়ে সফর তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাওয়ার বেশি সময় পেয়েছেন। পাকিস্তানের বোলারদের অবস্থা বুঝেছেন। তাইতো ২২ গজে ১৯১ রানের ইনিংসের ছবি আঁকতে পেরেছেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে মুশফিক পরিশ্রম ও একাগ্রতার কথাই বলেছেন।

পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে মুশফিক বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। সত্যি বলতে, এখন পর্যন্ত এটা আমাদের অন্যতম সেরা এক পারফরম্যান্স। আপনিও যেটা বললেন, আমরা বিদেশের মাটিতে তেমন ভালো কিছু করিনি। দল হিসেবে আমাদের লক্ষ্য ছিল আমরা সম্মিলিতভাবে এমন পারফরম্যান্স করবো যেটা সবাই দেখতে পারবে আমরা উন্নতি করেছি। আমাদের ব্যাটিং উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে।’

‘এজন্য শুধুমাত্র আমাকেই ক্রেডিট দিলে চলবে না। আমি মনে করি, ছেলেরা প্রত্যেকে এই টেস্টের জন্য নিজেদেরকে যেভাবে প্রস্তুত করেছে, পাকিস্তানে এসে এবং দেশের মাটিতে। আমি খুবই খুশি ছিলাম। আমি সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। নিজেকে নিয়ে দুইটি কথা বলতে চাই। দুই, আড়াই মাসের একটা গ্যাপ ছিল, তাই না? তাই বাংলা টাইগার্স ক্যাম্প আয়োজন করা হয়েছিল দেশের মাটিতে। যেখানে স্থানীয় কোচেরা ছেলেদের প্রস্তুত করেছে। এটি সমস্ত খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির জন্য সত্যিই উপকারী ছিল। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটারদের। বাকিরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। এজন্য এটা উপকারী ছিল। ওখানকার কন্ডিশনও প্রায় একই রকম।’ – যোগ করেন মুশফিক।

৩৭ পেরোনো মুশফিক ৮৯ টেস্ট খেলেছেন। তার সুযোগ আছে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ সেঞ্চুরি পাওয়া মুশফিক নিজেকে কোথায় নিয়ে যাবেন তা সময়ই বলে দেবে। লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে তার নাম। তবে নিজেকে সেভাবে মূল্যায়ন করেন না মুশফিক। দেশের হয়ে খেলার গর্ব এখনও খুঁজে বেড়ান।

‘আমি কখনো চিন্তা করিনা আমি এই দলের সবচেয়ে বয়স্ক বা আমি সবচেয়ে অভিজ্ঞ। কারণ, আমি যখন এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন আমাদের কাছে দেশের হয়ে আরেকটি টেস্ট খেলার সুযোগ হয় এবং আমি কেবল আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি এবং মাঠেও তাই। আমি দলের জন্য অবদান রাখি এবং দলের বাকিদের থেকে অনুপ্রাণিত হই। ঠিক এই কারণেই আমি আজ এখানে দাঁড়িয়ে। আমার একাগ্রতা আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’

ইয়াসিন/আমিনুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়